
বাংলাদেশ ব্যাংক পাচার অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ১২টি আন্তর্জাতিক আইন ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠান (asset-recovery firms) নিয়োগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে ইসলামী বাংলাদেশ ব্যাংকের এমডি ও সিইও ওমর ফারুক খান বলেন, “আন্তর্জাতিক আইনফার্ম ও রিকভারি সংস্থাগুলো টাকাগুলো ফিরে আনতে সহায়তা করবে। কিছু ব্যাংক ‘লিড ব্যাংক’ হিসেবে কাজ করবে, এবং একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে।”
তিনি আরও জানান, SPAR CID (স্পেশাল সিআইডি) ইতোমধ্যে ১১টি শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এনডিএ (গোপনীয়তা চুক্তি) সাপেক্ষে তারা স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করবে।
এবি ব্যাংকের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, এটি কোনও এক ব্যাংকের প্রকল্প নয়—“টোটাল ব্যাঙ্কিং” ধারণায় বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বৈঠকে প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে, যা প্রায় ৩০টি সংস্থার সঙ্গে আলাপচারিতার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।
পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী যোগ করেন, মুদ্রা শোধকরণ (money-laundering) সংক্রান্ত আইনের প্রেক্ষাপটে ওই ১২ প্রতিষ্ঠানকে আইনগত অধিকার সহায়তা দেবে।
এই উদ্যোগে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছাড়াও পাচার অর্থের সঙ্গে নাম পাওয়া শিল্পগোষ্ঠীর মধ্যে বসুন্ধরা, নাসা, এস আলম, বেক্সিমকো, ওরিয়ন, জেমকন, নাবিল, সামিট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পূর্বে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার করার কাজে যুক্ত ছিল STAR, IACCC, DOJ ও ICAR — এসব সংস্থা তথ্য সংগ্রহ ও আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অবিলম্বে ওই ১২ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করুক এবং রিকভারি প্রক্রিয়া শুরু করুক।