
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কারাগারে বন্দি নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি নিশ্চিত করতে চীনের সহায়তা চেয়েছেন তার কনিষ্ঠ পুত্র কিম এরিস। এরিস বিশ্বাস করেন, জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইয়ের চেয়ে সু চির সঙ্গে ‘চীনের সম্পর্ক বেশি ভালো’।
বর্তমানে ৮০ বছর বয়সী সু চি ১৯৮৯ সাল থেকে মোট ১৯ বছর আটক অবস্থায় কাটিয়েছেন। প্রথমবার গৃহবন্দি থাকার পর এখন তিনি কারাগারে নির্জন প্রকোষ্ঠে রয়েছেন। সু চি গৃহবন্দি থাকাকালে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান এবং তখন তার পক্ষ থেকে কিম এরিস পুরস্কারটি গ্রহণ করেছিলেন।
৪৮ বছর বয়সী কিম এরিস জীবনের বেশিরভাগ সময়ই জনসম্মুখের বাইরে নীরব জীবনযাপন করেছেন। সু চি গৃহবন্দি থাকাকালে তিনি কয়েকবার মায়ের সঙ্গে মিয়ানমারে দেখা করার অনুমতি পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর জেনারেল হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে সামরিক জান্তা তার মাকে কারাগারে নিয়ে গেলে লন্ডনে বসবাসরত এরিস অনিচ্ছাসত্ত্বেও তার মায়ের খারাপ হতে থাকা হার্টের সমস্যা এবং শোচনীয় বন্দি অবস্থা নিয়ে বিশ্বকে সতর্ক করতে মুখ খুলতে শুরু করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে তিনি জানান, তিনি ‘কারাগারে তার মাকে দেখতে যেতে চান’। ১৯৮৮ সালে সু চি যখন তার মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের সেবা করার জন্য তৎকালীন ইয়াঙ্গুন যান, তখন এরিসের বয়স মাত্র ১১ বছর ছিল এবং সেই সময়ই প্রথমবার তিনি মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হন। পরবর্তীতে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে দেশের বিরোধী দলগুলোকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়।
কিম এরিস জোর দিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের আগে ‘আমার মা ও এনএলডির (ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি) সঙ্গে চীনের একটি ভালো, উৎপাদনশীল কাজের সম্পর্ক ছিল’। সু চি এই সম্পর্ককে নিজের দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উপলব্ধি করেছিলেন এবং তা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।
এরিস বলেন, মিয়ানমারের সঙ্কট চীনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং এক্ষেত্রে জান্তার সমর্থনে সক্রিয় হয়ে ওঠা জালিয়াতির কেন্দ্রগুলোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। এরিস মন্তব্য করেছেন, অভ্যন্তরীণ শান্তি, জাতীয় পুনর্মিলন ও জনগণের ইচ্ছার ওপর ভিত্তি করে একটি সরকার এবং ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের চীনকে দরকার।
তিনি বিশ্বাস করেন, ‘মিয়ানমারের সমস্যাগুলো সমাধানের পূর্বশর্ত হিসেবে তার মায়ের মুক্তি দরকার।’