
পাকিস্তানের সঙ্গে চার দিনের সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ শেষ হওয়ার চার মাস পর এসে ভারত দাবি করছে, তারা পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এ দাবি করেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন তার দেশ পাকিস্তান বিমানবাহিনীর যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ এবং চীনের তৈরি জে-১৭ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে।
বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং আরও দাবি করেন, ভারতের বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি ছিল নিছকই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রোপাগান্ডা, যা দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য ছড়ানো হয়েছিল।
এপি সিং দাবি করেছেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য পাকিস্তানই ভারতের কাছে যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল। এর মাধ্যমে তিনি ভারত সরকারের বারংবার করা দাবিকে পুনর্ব্যক্ত করলেন যে, ১০ মে বন্ধ হওয়া যুদ্ধের আগে মূলত ইসলামাবাদ শান্তি চেয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ বা দুই দেশের ওপর চাপ দেওয়ার ফল ছিল না।
এপি সিং বলেন, বিশ্ব ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি ও সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম দেখেছে। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি সন্ত্রাসী ক্যাম্প এবং ঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুরে দেখা গেছে—নিষ্পাপ মানুষ হত্যা করার জন্য সন্ত্রাসীরা মূল্য চুকিয়েছে… এবং বিশ্ব দেখেছে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি। আমরা ৩০০ কিমি জুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছি, এরপরই তারা (পাকিস্তান) যুদ্ধবিরতি চেয়েছে।’
এদিকে চার মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকবার এই যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করেছেন। তিনি বুধবারও আমেরিকার সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমার হস্তক্ষেপে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানকেও নিয়ন্ত্রণে আনা হলো। আমি উভয়কে ফোন করেছি এবং এই ক্ষেত্রে, আমি ব্যবসার বিষয়টি ব্যবহার করেছি।’
ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান ভবিষ্যতের সামরিক সংঘাত নিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, ‘পরবর্তী যুদ্ধ পূর্ববর্তী যুদ্ধের চেয়ে ভিন্ন হবে। আমাদের এখনই প্রস্তুত থাকতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও আগে এই বিষয়ে মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘আজকের ২১ শতকে যুদ্ধের রূপ আরও দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। শুধু সৈন্যের সংখ্যা বা অস্ত্রের মজুদ আর যথেষ্ট নয়। সাইবার যুদ্ধ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিমানবিহীন যন্ত্র এবং উপগ্রহভিত্তিক নজরদারি আগামী যুদ্ধের রূপ নির্ধারণ করছে। সুনির্দিষ্ট অস্ত্র, বাস্তব-সময়ের গোয়েন্দা তথ্য এবং তথ্য-নির্ভর সিদ্ধান্ত এখন যেকোনো সংঘাতে সফলতার মূল চাবিকাঠি।’
সূত্র: এনডিটিভি