
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রকাশিত ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস (TIP) রিপোর্ট ২০২৫’-এ বাংলাদেশকে আবারও টিয়ার-২ পর্যায়ে রাখা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এই স্তরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার প্রতিরোধে ন্যূনতম মান পূরণে এখনও ব্যর্থ, তবে উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি থাকায় দেশটির অবস্থান টিয়ার-২-এ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
প্রশংসিত উদ্যোগ: ভুক্তভোগী শনাক্তকরণ নির্দেশিকা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বৃদ্ধি, একটি জাতীয় রেফারেল মেকানিজম (NRM) গৃহীত হয়েছে, পাচারের শিকার ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুরক্ষা সেবায় পাঠানো হয়েছে।
সমালোচনার জায়গা হিসেবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট উল্লেখ করেছে বিচার কার্যক্রমে দুর্বলতা, অভ্যন্তরীণ পাচার, বিশেষত যৌন শোষণ ও শিশুশ্রম প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতা, অনানুষ্ঠানিক শ্রম খাত পর্যবেক্ষণে শ্রম পরিদর্শকদের ক্ষমতার অভাব, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বিদেশফেরত শ্রমিকদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসনে ঘাটতি, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় পাচারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
মূল সুপারিশসমূহ:
১. পাচার অপরাধে জড়িতদের—including সরকারি কর্মকর্তাদের—বিচার ও দণ্ড নিশ্চিত করা
২. মানবপাচারবিষয়ক ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও দক্ষতা বৃদ্ধি
৩. পাচার-প্রবণ সব ভুক্তভোগীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়, সেবা ও চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা
৪. বিদেশগামী শ্রমিকদের ওপর আর্থিক চাপ কমাতে নিয়োগ ফি বাতিল এবং রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যক্রম কঠোরভাবে নজরদারি
৫. রোহিঙ্গা পাচারের অভিযোগে তদন্ত জোরদার ও সুরক্ষা প্রক্রিয়া প্রণয়ন
৬. পাচারের শিকার ব্যক্তিদের বেআইনি কার্যকলাপের জন্য শাস্তি বন্ধ
৭. ভারত-বাংলাদেশ ২০১৫ সালের সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নের মাধ্যমে যৌথভাবে পাচার প্রতিরোধ
TIP রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানবপাচার প্রতিরোধে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি থাকলেও আইনি প্রয়োগ, ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতে ঘাটতি রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সুপারিশ অনুযায়ী, কার্যকর ও মানবাধিকারভিত্তিক প্রতিকার নিশ্চিতে বাংলাদেশকে আরও নির্দিষ্ট ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিতে হবে।