
ক্রমেই জোরালো হচ্ছে খেলাধুলার মঞ্চে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান। জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ নিষিদ্ধের দাবি তোলার পর এবার ৫০ জন সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় যুক্ত হলেন এই উদ্যোগে।
ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী, ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার পল পগবা, ব্রিটিশ বক্সার জ্যাক চেল্লি, হিজাব পরা প্রথম ব্রিটিশ নারী জকি খাদিজা মেল্লা, ক্রিস্টাল প্যালেসের চিয়েক ডৌকুরে, চেলসির সাবেক তারকা হাকিম জিয়েচ, ডাচ উইঙ্গার আনোয়ার এল ঘাজি এবং লেস্টার সিটির সাবেক কোচ নাইজেল পিয়ার্সনসহ অনেকে। তাদের একটাই দাবি—ইসরায়েলকে অবিলম্বে উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হোক।
এই তালিকায় বিশেষভাবে আলোচিত আনোয়ার এল ঘাজি। জার্মান ক্লাব মেইঞ্জের হয়ে খেলার সময় ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার কারণে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছিল ক্লাবটি। পরে জার্মান আদালত জানায়, ঘাজির সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। বর্তমানে তিনি কাতারের আল সাইলিয়া ক্লাবে খেলছেন।
ব্রিটেনভিত্তিক নুজুম স্পোর্টসের উদ্যোগে ‘অ্যাথলেটস ফর পিস’ ব্যানারে উয়েফায় জমা দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে ইচ্ছুক খেলোয়াড়েরা এতে সই করেছেন। শেষ অংশে লেখা হয়, ‘আমরা উয়েফাকে আহ্বান জানাই, ইসরায়েলকে সব প্রতিযোগিতা থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করুন।
অ্যাথলেটদের পাঠানো চিঠিতে ফিলিস্তিনি কিংবদন্তি ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে পরিচিত এই ফুটবলার গত আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। চিঠিতে লেখা হয়, ‘জীবিত অবস্থায় খেলাধুলার মাধ্যমে তিনি আশা জাগিয়েছিলেন। মৃত্যুর মাধ্যমে মনে করিয়ে দিলেন, কেন এখনই আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছিল। প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও ফিফার সর্বশেষ দুটি কংগ্রেসে একই দাবি তোলে।
তবে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার যে কোনো উদ্যোগ প্রতিহত করবে তারা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবিসি স্পোর্টকে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করবো, ইসরায়েলের জাতীয় ফুটবল দলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করার কোনো প্রচেষ্টা সফল না হয়।’