
গত ১০ জুন এশিয়ান কাপ ফুটবল বাছাইয়ে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ আয়োজন করতে গিয়ে বাফুফে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হাইভোল্টেজের কাছে দায়িত্ব দিয়ে বাফুফে লাভবান হয়নি সেটা বুঝতে পারছে বাফুফে। আগামী ৯ অক্টোবর ঢাকায় এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে গ্রুপের পরবর্তী ম্যাচ আয়োজন করবে। আর্থিক ক্ষতি ঠেকাতে এবং স্বচ্ছতা আনতে এবার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করবে বলে গতকাল বাফুফের কম্পিটিশন কমিটি জানিয়েছে।
হংকং ম্যাচকে কেন্দ্র করে সবকিছু ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কীভাবে স্পন্সর আসে যায় তার অনেক কিছুই অজানা থেকে যায় কম্পিটিশন কমিটির। এবার কম্পিটিশন কমিটি নজর রাখতে চায়। স্পন্সরের বিষয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হবে। কম্পিটিশন কমিটির সদস্য তাজওয়ার আউয়াল বলেন, ‘স্পন্সর, ইভেন্ট পার্টনার এবং বাফুফে। একটি ট্রাই পার্টি চুক্তি হবে হবে।’
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে বিভিন্ন স্পন্সর দেখা গেছে। স্টেডিয়ামে নানা প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু বাফুফে নাকি আয়ের মুখ দেখেনি। লাভের গুড় কে খেয়ে ফেলেছে তা নিয়ে তিন মাসেও সেই সুরাহা করতে পারেনি বাফুফে। কিংবা পারলেও বিব্রত হওয়ার আশঙ্কায় প্রকাশ করতে চাইছে না। কম্পিটিশন কমিটির কথায় পরিষ্কার, আর্থিক লস হওয়ায় বাধ্য হয়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে যেতে চাইছে।

তাজওয়ার আউয়াল বলেন, ‘লস বলব না। এটা কিন্তু লস না। আমরা অতীতে এরকম খেলা চালাইনি। আমরা নিজেরাও জানতাম না, বাফুফেও জানত না, কত লাভ হতে পারে। আমাদের মেইন আইডিয়া ছিল আমরা নিজেদের টাকায় খেলা চালাব না। খেলাটা চালাতে যেটা খরচ হয় সেটা যেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দ্বারা ফুলফিল হয়। বাফুফের পকেট থেকে যেন টাকা খরচ না হয়। এটাকে লস বলব না। ডেফিনেটলি আমি বলব, এটা আমাদের লার্নিং (শিক্ষা) হয়েছে। তখন পূর্ববর্তী ম্যাচে (বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর) আমাদের সঙ্গে স্পন্সরদের যোগাযোগটা কম ছিল। ওখান থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ট্রাইপার্টি চুক্তি করব। এতে লংটার্মের জন্য লাভবান হবে বাফুফে।’
তাহলে কারা বাফুফের নামে স্পন্সর এনে অর্থ কামিয়ে গেল যে, বাফুফে লাভ দেখল না। তাজওয়ার আউয়াল জানিয়েছেন, ট্রাইপার্টি চুক্তি হলে স্পন্সর বিষয়ে লিকেজ থাকবে। সবকিছু জানতে পারব। কত লাভ হয়েছে, ব্যয় হয়েছে কত। ভ্যাট কত দিতে হয়েছে। সবকিছু জানা যাবে।’
যোগ্য সংগঠকদের বাইরে রেখে প্রযুক্তিনির্ভর হতে গিয়ে মাত্র এক ম্যাচ আয়োজনে বলা হচ্ছে অতীতে এরকম খেলা চালানোর অভিজ্ঞতা নেই। পেছনে তাকালে দেখা যায়, অতীতে এর চেয়ে হাজার গুণ বড় বড় টুর্নামেন্ট পরিচালনা করেছে বাফুফে। মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদের (অব.) মতো সংগঠকরা এএফসি এবং ফিফার চেয়ারে বসেছিলেন।

তাজওয়ার আউয়াল বলছেন, ‘তারা শিখছেন।’ বাফুফের চেয়ারে বসে যদি বলা হয় তিনি শিখছেন। কথাটা বলে কী নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। বাফুফে দেশের ফুটবলে নেতৃত্ব দেয়। তাদের কাছ থেকে অন্যরা শিখবেন, সেটা হতে পারে। বাফুফের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেউ যদি বলেন তিনি শিখছেন, তাহলে তো তার যোগ্যতা নিয়েই প্রথম প্রশ্ন উঠবে। কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফের সদস্য সাবেক ফুটবলার গোলাম গাউস, তিনি সংবাদ সম্মেলনে চুপ করে বসে থাকেন, সবকথা বলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের ছোট ভাই, কম্পিটিশন কমিটির সদস্য তাজওয়ার আউয়াল।
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রি করতে টিকিফাই নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছিল বাফুফে। তখন সংবাদ সম্মেলনে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। টিকিট ব্যবস্থাপনায় প্রচুর সমালোচনা শুনতে হয়েছিল বাফুফেকে। এবার সেই প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়নি বাফুফে।

গতকাল নতুন প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে তাজওয়ার আউয়াল বলেন, ‘সাতটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছিল, সর্বনিম্ন দরদাতা কুইকেটকে দেওয়া হয়েছে, একসঙ্গে ১ লাখ লগইন করা যাবে। টিকিট কার্যক্রমে আগের মতো সমস্যা দেখা দিলে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায় করবে বাফুফে। আগামীকাল থেকে টিকিট পাওয়া যাবে। একজন ৪০০ টাকা মূল্যের ৫টি টিকিট কিনতে পারবেন।