
ফুটবলের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সম্মাননা ব্যালন ডি’অর অ্যাওয়ার্ড। ফ্রান্স ফুটবল কর্তৃক পরিচালিত হওয়া এই অ্যাওয়ার্ডের ৬৯তম আসর অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল রাত ১টায়। প্যারিসের থিয়েটার ডু শ্যাটেলেটে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরাবরের মতো বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হবে এই পুরস্কার। সবশেষ আসরে ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত এই সম্মাননা জিতেছেন ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি। যদিও তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি।
পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো অনেকের মতে, সবশেষ ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এবারের আসরে ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন পিএসজির ফরাসি তারকা উসমান ডেম্বেলে, বার্সেলোনার স্প্যানিশ তারকা লামিনে ইয়ামাল এবং লিভারপুলের মিশরের তারকা মোহাম্মদ সালাহ।
গেল মৌসুম দুর্দান্ত কাটিয়ে প্যারিসের ক্লাব পিএসজি। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ট্রেবল জিতেছে পিএসজি। এমন দুর্দান্ত মৌসুম কাটানোর পেছনে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন উসমান ডেম্বেলে। গেল মৌসুমে ৩৫ গোল করার পাশাপাশি ১৪ অ্যাসিস্ট করেছেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। যা কালজয়ী প্রত্যাবর্তন।
ডেম্বেলে যদি ব্যালন ডি’অর জেতে, তাহলে ২০২২ সালে করিম বেনজেমার পর কোনো ফরাসি তারকা উঁচিয়ে ধরবেন ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত এই সম্মাননা। বেনজেমার আগে ১৯৯৮ সালে ফরাসি ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অর জয় করেছিলেন জিনেদিন জিদান। ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ তিনবার ব্যালন ডি’অর জয় করেছিলেন মিশেল প্লাতিনি। ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৫ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন সাবেক জুভেন্টাস কিংবদন্তি।
অন্যদিকে গেল বছর দ্বিতীয় স্প্যানিশ ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অর জয় করেছিলেন রদ্রি। এই মিডফিল্ডারের আগে স্প্যানিশদের হয়ে প্রথমবারের মতো ১৯৬০ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন লুইস সুয়ারেজ। ইয়ামাল যদি এবার ফুটবলের এই ব্যক্তিগত সম্মাননা জয় করতে পারে, তাহলে তিনি হবেন ব্যালন ডি’ অর জয় করা তৃতীয় স্প্যানিশ ফুটবলার।
গেল মৌসুমটা ভালো কাটিয়েছে কাতালানরা। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নিজের পায়ের জাদুতে ফুটবল বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধার করার স্বদেশীয় ট্রেবল জিতেছে বার্সা। যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে ইউরোপ ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ শিরোপা জেতা হয়নি কাতালানদের। তবে মৌসুম জুড়ে ইয়ামাল ছিলেন দুর্দান্ত। ১৮ গোল করার পাশাপাশি ২১ অ্যাসিস্ট করেছেন সদ্য ১৮-তে পা দেওয়া ইয়ামাল। তিনি যদি আগামীকাল ব্যালন ডি’অর জেতেন তাহলে লিওনেল মেসির পর বার্সেলোনার প্রথম ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অর জয়ের গৌরব অর্জন করবেন তিনি।
এছাড়াও বার্সেলোনা ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়াও আছেন ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে। গোল মৌসুমে ৩৯ গোল এবং ২৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। গতকাল বার্সা বস হ্যান্সি ফ্রিক জানিয়েছেন, ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন এই ব্রাজিলিয়ান। হ্যান্সি ফ্রিকের সঙ্গে সফরসঙ্গী হবেন লামিনে ইয়ামাল, রাফিনিয়া ও পাউ কিউবারসি।
আগামীকাল ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে চোখ থাকবে লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহর ওপর। গেল মৌসুমটা দুর্দান্ত কাটিয়েছেন এই মিশরীয় ফরোয়ার্ড। প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ গোল এবং অ্যাসিস্ট দাতা হয়েছেন তিনি। পুরো মৌসুমে ৩৪টি গোল এবং ২৩ অ্যাস্টিস করেছেন লিভারপুল তারকা।
এছাড়াও এই তালিকায় ভালোভাবে আছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা কিলিয়ান এমাবপ্পে। যদিও গেল মৌসুমে রদ্রির কাছে ব্যালন ডি’অর হেরে ১০ গুণ শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার কথা বললেও ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে থাকা ১০ জনের তালিকায় নেই ভিনিসিয়স জুনিয়র। আগামীকাল রাতে যার হাতে উঠুক ব্যালন ডি’অর, নতুন তারকা পাবে ফুটবল বিশ্ব।