Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

বিশ্ব বাঁশ দিবস আজ

বিশ্ব বাঁশ দিবস আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস আজ
বিশ্ব বাঁশ দিবস আজ


‘বাঁশ খাওয়া’ শব্দটা যতটা নেগেটিভ অর্থে বোঝানো হোক না কেন বাস্তব জীবনে বাঁশের অবদান কিন্তু কম নয়। বাঁশ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে যে আলাদা করে খেয়াল না করলেও প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে আমরা সবাই এর ওপর নির্ভর করি। আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস। প্রতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। 

বাঁশ দিবস ২০২৫-এর থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘নেক্সট জেনারেশন ব্যাম্বো: সলিউশন, ইনোভেশন অ্যান্ড ডিজাইন’। 

Advertisement

আমাদের চোখে বাঁশ শুধু ঘরদোরের কাজে প্রয়োজন হয়, বাস্তবে এটি দেশের অর্থনীতিতে একটি বিশাল অবদান রাখছে। গ্রামীণ এলাকায় বাঁশের চাষ ও বেচাকেনা হাজারো মানুষের জীবিকার উৎস। আর শহরে বাঁশের তৈরি আসবাব, চেয়ার, টেবিল, খেলনা ও অন্যান্য শিল্পপণ্য তৈরি হয়ে দেশ-বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।



দেশে বাঁশের বাজারের মূল্য ৫০০ কোটি টাকারও বেশি, যা প্রমাণ করে বাঁশ শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম অবলম্বন।

বাঁশের বাজারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য ধরে রেখেছে। রাঙামাটির বন বিভাগের হিসাবে শুধু ওই জেলা থেকে বছরে প্রায় ৭০ কোটি টাকার বাঁশ বিক্রি হয়। রাজশাহী অঞ্চলে বাঁশ বেচাকেনার বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এর বাইরে মানিকগঞ্জের স্থানীয় হাটগুলোতে মাসে ২৫ লাখ টাকার বাঁশ বিক্রি হয়, যা বছরে প্রায় তিন কোটি টাকার সমান।



মৌলভীবাজারের কালারবাজারেও বছরে গড়ে দেড় কোটি টাকার বেশি বাঁশ কেনাবেচা হয়। এসব আঞ্চলিক বাজারের লেনদেন যোগ করলে সহজেই বোঝা যায়, দেশের বাঁশ অর্থনীতির বার্ষিক অঙ্ক ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। অথচ এখনো এটি আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যানের বাইরে।

বাংলাদেশে বাঁশ শুধু নির্মাণসামগ্রী হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না, বরং নানা ধরনের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসেও এটি অপরিহার্য। গ্রামীণ বাড়ির চালা, বেড়া কিংবা অস্থায়ী সেতু নির্মাণ থেকে শুরু করে ডালি, ঝুড়ি, চালুনি, হাতপাখা, খাটিয়া—সব জায়গাতেই বাঁশের উপস্থিতি চোখে পড়ে।

কৃষিক্ষেত্রে ধান শুকানোর মাচা, ফসল বহনের ঝুড়ি, সবজি চাষে খুঁটি, এমনকি মাছ ধরার চাঁই বা ঝাঁকিও তৈরি হয় বাঁশ দিয়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশের ব্যবহার আরো আধুনিক রূপ নিয়েছে। এখন বাঁশ থেকে তৈরি হচ্ছে ফার্নিচার, বাঁশ বোর্ড, বাঁশ কাগজ, এমনকি টেক্সটাইল ফাইবার। পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে বাঁশের তৈরি স্ট্র, প্লেট, কাটলারিজ কিংবা টুথব্রাশও দেশে ও বিদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ থেকে বাঁশের তৈরি পণ্য এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ি রিশিপাড়া এলাকার হস্তশিল্পীরা বাঁশ ও বেতজাত পণ্য তৈরি করে ২৫টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করছেন। প্রতিবছর এখান থেকে প্রায় এক কোটি টাকার বেশি আয় হচ্ছে। গাজীপুরেও কয়েকটি হস্তশিল্প কারখানায় মাসে প্রায় আড়াই কোটি টাকার বাঁশজাত পণ্য বিদেশে যাচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে হস্তশিল্প খাতে ২৯.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যার বড় অংশই বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের এসব পরিবেশবান্ধব বাঁশজাত পণ্যের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।



বৈশ্বিকভাবে বাঁশ শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ব বাঁশ সংস্থা। ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অষ্টম বিশ্ব বাঁশ কংগ্রেস চলাকালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায় বিশ্ব বাঁশ দিবস।

ওই বছরের বাঁশ সম্মেলনে প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং দিনটিকে বিশ্ব বাঁশ দিবস হিসাবে মনোনীত করার প্রস্তাবে সম্মত হন। এই দিবস পালনের প্রস্তাব রেখেছিলেন সংস্থার তৎকালীন সভাপতি কামেশ সালাম।

বর্তমানে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে এই দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় পর্যায়ে দিবসটি পালিত হলেও জাতীয় নীতি নির্ধারণে বাঁশকে এখনো প্রান্তিক খাত হিসেবেই দেখা হয়।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, বাঁশ বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির এক অমূল্য সম্পদ। অর্ধশতাধিক বড় বাজারের লেনদেনের অঙ্কই যখন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, তখন বোঝা যায় বাঁশ কেবল কৃষক-কারিগরের জীবিকা নয়, এটি হতে পারে জাতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী একটি খাত। বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে বাঁশজাত পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, যেখানে বাংলাদেশ আরো বড় অংশীদার হতে পারে।



তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে বাঁশ চাষ ও বাজারজাতকরণকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় আনা জরুরি। নির্ভরযোগ্য জাতীয় পরিসংখ্যান তৈরি, কৃষক ও কারিগরদের প্রশিক্ষণ, বাঁশ প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ, এবং রপ্তানি সহায়তা বাড়ানো হলে বাঁশ অর্থনীতি বাংলাদেশের গ্রামীণ উন্নয়ন ও বৈদেশিক আয়—দুই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।



এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান জানান, দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে বাঁশের অবদান এখনো গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এই সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন না এবং খাতটির সমস্যা ও সুযোগ সরকারের কাছে পর্যাপ্তভাবে তুলে ধরতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘বাঁশ খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এবং শুধু ঘরদোর বা নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে নয়, বিভিন্ন ধরনের শিল্পপণ্য তৈরির মাধ্যমে এটি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। বাঁশের তৈরি পণ্য এরই মধ্যে দেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে, যা এই খাতের আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রমাণ করছে।’

 





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
পাকিস্তান-সৌদি চুক্তিতে ভারতের ওপর প্রভাব খতিয়ে দেখছে নয়াদিল্লি

পাকিস্তান-সৌদি চুক্তিতে ভারতের ওপর প্রভাব খতিয়ে দেখছে নয়াদিল্লি

Next Post
৯ দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তান গেলেন স্বরাষ্ট্র সচিব

৯ দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তান গেলেন স্বরাষ্ট্র সচিব

Advertisement