
২০২২ সালের দাঙ্গা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতির তীব্র সমালোচনা করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমেরিকার শত্রুভাবাপন্ন ও অপরাধমূলক আচরণের সুস্পষ্ট উদাহরণ।
তেহরান থেকে জানানো হয়, ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের অপরাধের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এ ধরনের বিবৃতি ভণ্ডামি, প্রতারণা ও ঔদ্ধত্য ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কোনো যুক্তিবাদী এবং দেশপ্রেমিক ইরানি এমন একটি সরকারের বন্ধুত্ব বা সহানুভূতিতে আস্থা রাখে না, যে সরকার বহু দশক ধরে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে এবং ইরানিদের বিরুদ্ধে নানামুখী অপরাধ চালিয়ে গেছে। তারা উল্লেখ করে, ১৯৫৩ সালের ১৯ আগস্টের অভ্যুত্থান, ইরানের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে সাদ্দামের সঙ্গে সহযোগিতা ও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার, ১৯৮৮ সালে ইরানি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করা, কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা এবং বিজ্ঞানীদের হত্যায় জায়নবাদী শাসনের সঙ্গে সহযোগিতা—সবই যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধের অংশ। এমনকি গত জুন মাসে ইরানি নারী, শিশু ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার ঘটনাকেও তারা সেই ধারাবাহিক অপরাধের একটি অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও অভিযোগ করে, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ যারা দখলদার ও গণহত্যায় লিপ্ত জায়নবাদী শাসনের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক। একই সঙ্গে, যে রাষ্ট্রে বর্ণবাদ ও জাতিগত বৈষম্য শাসনব্যবস্থার অংশ, তাদের মানবাধিকারের মতো উচ্চ নীতির বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো নৈতিক বৈধতা নেই। মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েল গত দুই বছরেরও কম সময়ে ৬৫ হাজারের বেশি নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইরানের সচেতন জনগণ বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায়, মার্কিন রাজনীতিবিদদের মানবাধিকার নিয়ে বক্তব্যকে ভণ্ডামি ও অপরাধমূলক আচরণের আলোকে বিচার করে। তারা স্পষ্ট করে বলেছে, ইরান কখনোই আমেরিকার শাসকগোষ্ঠীর বর্বর অপরাধ, অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং চলমান শত্রুতা ভুলবে না এবং ক্ষমাও করবে না।
সূত্র: মেহের নিউজ