Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

আশঙ্কাজনকভাবে কমছে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ

আশঙ্কাজনকভাবে কমছে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ
আশঙ্কাজনকভাবে কমছে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ


দেশে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এর কারণ হিসেবে ২৫ শতাংশ নারী মাতৃত্বকালীন ছুটির পর কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। পারিবারিক চাপ, যানবাহন সুবিধার অভাব এবং বিরূপ কর্মপরিবেশ এই হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, পরিবহন সুবিধা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনই নারীকে কর্মক্ষেত্রে ধরে রাখতে পারে। 

Advertisement

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, মাত্র এক বছরে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি ১৭ লক্ষ হ্রাস পেয়েছে, যার বেশিরভাগই হ্রাসের জন্য নারীরা দায়ী।

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ২০২৪ সালে মোট শ্রমশক্তি ছিল ৭.১৭ কোটি, যা আগের বছরের ৭.৩৪ কোটি থেকে কমেছে। পুরুষের অংশগ্রহণ মূলত ৪.৮ কোটিতে অপরিবর্তিত রয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৪.৮১ কোটি। তবে একই সময়ে নারীর অংশগ্রহণ ২.৫৩ কোটি থেকে কমে ২.৩৭ কোটিতে দাঁড়িয়েছে।

২০১০ সালের পর এটি দেশের শ্রমশক্তির প্রথম সংকোচন। ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, শ্রমশক্তি ১.৬ কোটিরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যার প্রধান কারণ নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, যা ২০১০ সালে ১.৭২ কোটি থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ২.৫৩ কোটিতে পৌঁছেছে।

চট্রগ্রাম ওমেন্স চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এবং পাওয়ার বোন এন্ড ইন্জিনিয়ারিং টেকনোলজির সিইও সুবর্ণা দে গত ১ বছরে শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়কে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিষয়গুলো হচ্ছে- 

১/ সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। 

২/ প্রযুক্তি গত উন্নয়নের কারণে দক্ষ নারী শ্রম শক্তির উন্নতি না হওয়ার কারণে নারীদের অংশগ্রহণ কমছে।

৩/ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ও নারীদের অবাধ স্বাধীনতার বিষয়ে রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করাও দায়ী। 

৪/ ধর্মীয় অনুশাসন কে পুঁজি করে এক শ্রেণীর মানুষের নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণকে সহিংসতায় রুপান্তর করার ফলে নারীদের নিরাপত্তা হূমকির মুখে পড়াতে নারীরা কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। ইদানীং এই বিষয়টিই সবচেয়ে বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

৫/ নারী নির্যাতন গত বছরের তুলনায় এই বছর নারীদের প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, খুন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, এত পরিমাণ বেড়েছে নারীরা ভীত হয়ে পড়েছে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে।

৬/ নারীর কষ্টার্জিত অর্জনকে অব মূল‍্যায়ন করা, স্বীকৃতি না দেয়া, পরিবারের সহযোগিতা না পাওয়া, এসব নারীদের বাহিরে কর্মবিমুখ করছে।
 

‘উন্নয়নের স্তরের সাথে সাথে নারী শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার পরিবর্তিত হতে থাকে,’ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) জেনেভা অফিসের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন।

তিনি একটি ইউ (U)-আকৃতির সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন: উন্নয়নের মধ্যবর্তী পর্যায়ে অংশগ্রহণ হ্রাস পায় এবং উচ্চ পর্যায়ে আবার বৃদ্ধি পায়। একটি কারণ, তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, শিক্ষায় তালিকাভুক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ প্রায়শই হ্রাস পায়।

‘কর্মসংস্থানের সুযোগ, বিশেষ করে উৎপাদন খাতে, সংকুচিত হচ্ছে। এটি হয়তো স্বল্প বা অশিক্ষিত মহিলাদের মধ্যে শহুরে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ হ্রাসের কারণ হতে পারে,’ তিনি বলেন।

ইসলাম উল্লেখ করেছেন যে উচ্চ শিক্ষার স্তরের মহিলাদের ক্ষেত্রে চিত্রটি আরও জটিল। তাদের আকাঙ্ক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ চাকরির সীমিত প্রাপ্যতা, শিশু যত্নের সুবিধার মতো সহায়ক অবকাঠামোর অভাব এবং সামাজিক কারণগুলি – এই সমস্ত বিষয়গুলি ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষিত শহুরে নারীদের মধ্যে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য, তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থ এবং আতিথেয়তা সহ আধুনিক পরিষেবা খাতে আরও সুযোগ তৈরির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা উল্লেখ করেন যে, মূলধারার শ্রমবাজারে, যার মধ্যে শহুরে, আধা-দক্ষ এবং আনুষ্ঠানিক চাকরি অন্তর্ভুক্ত, নারীর অংশগ্রহণে খুব বেশি উন্নতি হয়নি।

‘এটি কাঠামোগত রূপান্তরের সাথে জড়িত। অর্থনীতি স্বাভাবিকভাবেই কৃষি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, কিন্তু এই রূপান্তরের ফল কর্মসংস্থানে প্রতিফলিত হচ্ছে না, বিশেষ করে নারী কর্মসংস্থানে নয়,’ তিনি মতামত দেন। বিদিশা এই পতনের পিছনে চারটি প্রধান কারণ তুলে ধরেন।

প্রথমত, সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ধীরগতিতে রয়ে গেছে, যাকে ব্যাপকভাবে বেকারত্বের প্রবৃদ্ধি বলা হয়। “যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি দুর্বল হয়, তাহলে নারীর অংশগ্রহণও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

দ্বিতীয়ত, নারী-নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে, অটোমেশন এবং উন্নত প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে পোশাক শিল্পে প্রতিযোগিতা তীব্রতর হয়েছে।

‘পরিসংখ্যান, যদিও সবসময় সরকারী উৎস থেকে পাওয়া যায় না, দেখায় যে পোশাক শিল্পে নারীর অংশ এখন প্রায় ৬৫ ​​শতাংশ, যা আগে ৮০ শতাংশেরও বেশি ছিল,’

তিনি আরও বলেন, প্রতিযোগিতামূলকভাবে টিকে থাকার জন্য নারীদের এখন আরও দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

‘আনুষ্ঠানিক, নগর উৎপাদন কাজে নারীর অংশের এই হ্রাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,’ তিনি বলেন।

তৃতীয়ত, গ্রামীণ অ-কৃষি খাতে, মূলধনের অভাব, বাজার অ্যাক্সেস এবং তথ্যের মতো বাধার কারণে উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত।’এখানে নীতি এবং আর্থিক সহায়তা অপর্যাপ্ত।’

বিদিশা আরও উল্লেখ করেছেন যে ২০২২ সালে নারী শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ ৪৩ শতাংশে পৌঁছেছে এবং এটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে, তবে বেশিরভাগ বৃদ্ধি গ্রামীণ এলাকা থেকে এসেছে। ‘শহুরে অংশগ্রহণ কম ছিল, এবং সংখ্যায়, বৃদ্ধি মাত্র কয়েক লক্ষ ছিল, নাটকীয় নয়।’

তিনি নারীর কর্মসংস্থানের মানকে প্রধান উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ‘উৎপাদন ক্ষেত্রে, আনুষ্ঠানিক, নগর এবং দক্ষতা-ভিত্তিক নারীর চাকরিতে উৎসাহব্যঞ্জক প্রবণতা দেখা যায়নি।’

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের প্রাক্তন গবেষণা পরিচালক বিদিশা বলেন, কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধি নেতিবাচক নয়, তবে আসল উদ্বেগ হল নারীরা অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নত মানের চাকরি পাচ্ছে কিনা।

তিনি আরও যোগ করেন,‘আদর্শভাবে, কর্মসংস্থান উৎপাদন এবং ছোট পরিষেবা খাতের দিকে ঝুঁকে পড়া উচিত, কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তন মোটেও দেখতে পাচ্ছি না,’।

এদিকে বাংলাদেশে নারী শ্রমশক্তি অবিশ্বাস্য হারে কমে যাওয়া সম্পর্কে প্রকৌশলী ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, 

নারীরা যখন কর্মসংস্থানের জন্য বাইরের জগতে পা বাড়ান, তখন সেই গল্পের সাথে যুক্ত হয় সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, পারিবারিক চাপ, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও নিরাপত্তার প্রশ্ন। আমি যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় রয়েছি সেদিক থেকে দেখছি, বহুদিনের প্রথা ভেঙে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লেও, তাদের পথচলা এখনও নানা চ্যালেঞ্জে ভরা। সভ্যতার এতযুগ পরে এসেও কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা গুলোর অবসান সেভাবে লক্ষ্য করা যায় না।

বলা যায়, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে নারী ইইই ইঞ্জিনিয়ারদের হাত এখন স্পর্শকাতর তারের মতোই সক্রিয়। কিন্তু এই স্পর্শের নিচে লুকিয়ে আছে এক অদৃশ্য ‘লোডশেডিং’—যেখানে প্রতিদিন নিভে যায় তাদের ক্যারিয়ারের স্বপ্ন, জ্বলে ওঠে সমাজের অযৌক্তিক প্রত্যাশার ‘ওভারলোড। ল্যাবের সোল্ডারিং আয়রন থেকে শুরু করে পাওয়ার প্লান্টের হাই-ভোল্টেজ যন্ত্রপাতি—প্রতিটি টুলসেই তাদের দক্ষতা অনন্য। অথচ ইন্টারভিউ রুমে প্রথম প্রশ্নই হয়, ‘মেয়ে হয়ে ফিল্ডে কাজ করবেন কীভাবে?’ বাড়িতে শোনা হয়, ‘ইইই পড়ে কী হবে? বিয়ে না করলে তো জীবনটাই অন্ধকার!’ আর ফিল্ডে গেলে শুনতে হয় শ্রমিকের বিদ্রূপ— ‘ম্যাডাম, টেস্টারটা ধরতে ভয় পাবেন না তো?’ এখানে সমস্যা শুধু টেকনিক্যাল নয়, সমস্যা সমাজের ‘শর্ট সার্কিটেড’ মানসিকতা, যেখানে নারীর বিদ্যুৎ-মেধাকে অগ্রাহ্য করে জ্বালানো হয় লিঙ্গবৈষম্যের ‘ফিউজ’!

অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ইঞ্জিনিয়ারে মতো এতটা মেধাবৃত্তিক একটা পেশাতেও নারী ইঞ্জিনিয়াররা প্রায়শই কর্মক্ষেত্রে উপেক্ষা, কটূক্তি, কিংবা ‘কম সক্ষম’ ভাবার মনোভাবের শিকার হন। অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় তাদের ব্যক্তিগত জীবন বা পোশাক নিয়ে মন্তব্য, ব্যঙ্গ, এমনকি সহকর্মীদের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মানসিক চাপে ভুগতে হয়।





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
আগস্টে সড়কে নিহত ৪২৮ জন : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

আগস্টে সড়কে নিহত ৪২৮ জন : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

Next Post
হ্যান্ডশেক না করায় ভারতের বিরুদ্ধে এসিসিতে পাকিস্তানের অভিযোগ 

হ্যান্ডশেক না করায় ভারতের বিরুদ্ধে এসিসিতে পাকিস্তানের অভিযোগ 

Advertisement