
মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক দলের দুই সিনেটর, ক্রিস ভ্যান হলেন এবং জেফরি মার্কলে, মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের জাতিগতভাবে নির্মূলের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এই কাজে সহযোগিতা করছে।
২১ পৃষ্ঠার এই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ইসরায়েলের কৌশল দুটি দিককে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথমত, বাড়িঘর ধ্বংস করে গাজার মানুষদের ফিরে যাওয়ার মতো কোনো জায়গা না রাখা এবং দ্বিতীয়ত, খাদ্য, পানি ও ওষুধের মতো মৌলিক চাহিদা থেকে ফিলিস্তিনিদের বঞ্চিত করা।
রিপোর্টে আরও অভিযোগ করা হয় যে, দক্ষিণ গাজায় সীমিত কয়েকটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যা খাদ্যকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের একটি স্পষ্ট প্রমাণ। সিনেটররা দাবি করেন যে, এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সিনেটরদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, কারণ ওয়াশিংটন বিপুল অর্থ দিয়ে ইসরায়েলকে যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করছে। সিনেটর ভ্যান হলেন বলেন, ‘আমরা এভাবে নীরব থাকতে পারি না, এখনই এই সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’
ইউনিসেফ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে, গাজায় শিশুদের অপুষ্টি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগস্ট মাসে স্ক্রিনিংয়ে দেখা গেছে, শিশুদের মধ্যে ১৩.৫ শতাংশ তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে, যা জুলাই মাসে ছিল ৮.৩ শতাংশ। বিশেষ করে গাজা সিটিতে এই হার আরও বেশি, যেখানে ১৯ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত।
ইউনিসেফ আরও জানায় যে, উত্তর গাজা এবং গাজা সিটিতে ইসরায়েলের হামলা ও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশের কারণে ১০টি বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে শিশুদের চিকিৎসা সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল সতর্ক করে বলেন, ‘এখন গাজার প্রতি পাঁচজন শিশুর একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এটি শুধু মানবিক সংকট নয়, বরং গোটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো এক ভয়াবহ পরিস্থিতি।’
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি