
কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি সম্প্রসারণকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্রদেশগুলোর মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফরে গেছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তিনি ইসরায়েলের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন।
উড়োজাহাজে ওঠার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রুবিও বলেন যে, কাতারে হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্তুষ্ট ছিলেন না। তবে তিনি আরও বলেন যে, এই ঘটনা ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাজার জিম্মিদের পুনরুদ্ধারের বিষয়ে ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আলোচনা করবেন এবং কীভাবে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়, সে বিষয়েও কথা বলবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যা হওয়ার হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে দেখা করব। ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে কথা বলব। এখনো ৪৮ জন জিম্মি আছেন। অবিলম্বে তাদের সবাইকে একসঙ্গে মুক্ত করা দরকার। আর এটি শেষ হলেও সামনে অনেক কঠিন কাজ বাকি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাজাকে এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে সেখানকার বাসিন্দারা নিজেদের প্রত্যাশা অনুযায়ী মানসম্মত জীবনযাপন করতে পারেন।’
এদিকে, ইসরায়েল থেকে ফিরে আগামী সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পিত ব্রিটেন সফরে যোগ দেবেন মার্কো রুবিও। ইসরায়েল প্রায় দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের কারণে সেখানে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়, যাতে ইসরায়েলের তথ্যমতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। হামাস তখন ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এখনো ৪৮ জন জিম্মি হামাসের কাছে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় এসব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং গাজা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। অথচ গত মঙ্গলবার ইসরায়েল কাতারের রাজধানী দোহায় বিমান হামলা চালিয়ে হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের হত্যার চেষ্টা করে।
মার্কিন কর্মকর্তারা এই হামলাকে একতরফাভাবে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন যে, এটি মার্কিন ও ইসরায়েলিদের স্বার্থবিরোধী। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতারে এমন হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন আরব দেশ। এর ফলে কাতারের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনা হুমকির মুখে পড়েছে। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে রুবিও কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানির সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ওই দিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হন।
সূত্র: রয়টার্স