
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে সরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার একাধিক বিতর্কিত ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধে বুধবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদ কুতুব। সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, পরিচালক (তথ্যপ্রযুক্তি) মতিউর রহমান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
চাকরির সাত মাসেই তদন্তে শাহীনুল ইসলাম
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম। নিয়োগের সাড়ে সাত মাসের মধ্যেই বিতর্কিত ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় তিনি এখন তদন্তের মুখে। এর আগে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকও আলাদাভাবে একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিকে সহায়তা করছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, বিএফআইইউ প্রধানকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, বিএফআইইউ সূত্র বলছে, তিনি আজ অফিস করেছেন।
যেভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন শাহীনুল ইসলাম
গত বছরের ১২ আগস্ট আগের প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের পদত্যাগের পর প্রায় পাঁচ মাস বিএফআইইউর প্রধানের পদটি শূন্য ছিল। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এক নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়।
বোর্ডে ছিলেন বুয়েটের শিক্ষক ড. মো. সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী, আইন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মহিউদ্দীন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক।
২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২৭ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রাথমিক বাছাই শেষে সাক্ষাৎকারে ডাকা হয় ২০ জনকে। ১ জানুয়ারির সভায় চূড়ান্ত তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম। তাঁর পরের স্থানেই ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম ও এ কে এম এহসান।
নিয়োগের সুপারিশ ও নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিবেদন
প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে অভিজ্ঞতা, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দক্ষতা যাচাই করে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পাশাপাশি নিয়োগে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার প্রতিবেদনকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য পাঠানো সারসংক্ষেপে তিন প্রার্থীর নাম উল্লেখ থাকলেও প্রথম স্থান পাওয়ায় শাহীনুল ইসলামকে দুই বছরের জন্য নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।