
বৃষ্টি-পরবর্তী জমে থাকা পানি এবং বাড়তি তাপমাত্রা মশার বংশ বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে, যা ডেঙ্গুর বিস্তার বাড়িয়ে তুলছে। ফলে শুধু সরকারি ব্যবস্থার ওপর ভরসা না করে, ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ডেঙ্গু এখন আর আগের মতো সহজভাবে মোকাবিলা করার অবস্থায় নেই।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। সভায় ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় সহায়ক বিভিন্ন চিকিত্সাসামগ্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ডেঙ্গু এখন আর আগের মতো সহজভাবে মোকাবিলা করার অবস্থায় নেই। এ রোগের ধরন বদলেছে, অনেক রোগীর অবস্থাই দ্রুত জটিল হয়ে উঠছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজনও বেড়েছে। এজন্য পোর্টেবল আলট্রাসনোগ্রাম ও বেডসাইড হেমাটোক্রিট মেশিনের প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। তিনি বলেন, এই যন্ত্রপাতি থাকলে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়, যা চিকিৎসা কার্যক্রমকে গতিশীল করে এবং জটিলতা কমাতে সাহায্য করে।
এ সময় দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলে ধরে অধ্যাপক আবু জাফর জানান, বরগুনায় কিছুদিন আগে ডেঙ্গুর একটি আউটব্রেক (সংক্রমণ) দেখা দিলেও বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সারা দেশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে জনসচেতনতা বাড়ানো এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, জ্বর হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব। সভা শেষে আটটি পোর্টেবল আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ২১টি বেডসাইড হেমাটোক্রিট মেশিন এবং ১ হাজার ৬০০ পিস ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অন্যান্য চিকিত্সাসামগ্রী হস্তান্তর করে ডব্লিউএইচও।
এ সময় সংস্থাটির প্রতিনিধিরা জানান, ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।