
গাজায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে এবার ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের আকাশজুড়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছে যুদ্ধবিরোধী স্লোগান। ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজারো মানুষ একত্রিত হয়েছেন বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এই উৎসবকে ঘিরে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ভেন্যুর বাইরের রাস্তায় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক সংগঠক, মানবাধিকার কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
তাদের একটাই দাবি, গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধ হোক এবং ভেনিস উৎসব হোক এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মঞ্চ।
বিক্ষোভের আয়োজক সংগঠনগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ‘ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো আয়োজন হতে পারে না। যখন ফিলিস্তিনে নিরীহ শিশু, নারী ও পুরুষ নিহত হচ্ছেন, তখন এই উৎসবকে মানবিক অবস্থান নিতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী ক্যাম্প কোথাও বোমাবর্ষণ থেকে রেহাই নেই। খাদ্য, পানি, ওষুধের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। এই বর্বরতায় পশ্চিমা দেশগুলো প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে যাচ্ছে অস্ত্র, অর্থনীতি ও কূটনীতি দিয়ে। যা খুবই নিন্দনীয়।’
উৎসব শুরুর আগেই ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নিয়ে ভেনিস কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০০ শিল্পী ও নির্মাতা। তারা স্পষ্টভাবে অনুরোধ করেছিলেন, যেন গাল গ্যাদত, জেরার্ড বাটলারের মতো ইসরায়েলপন্থী তারকাদের আমন্ত্রণ জানানো না হয়।
ভেনিস উৎসবের আয়োজক সংস্থা বায়েনালে জানায়, ‘ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব সব সময়ই বিশ্বের সবচেয়ে জরুরি সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যুতে সংবেদনশীল থেকেছে। এর প্রতিফলন ঘটছে উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্রগুলোতেও।’
উৎসবের প্রধান আলবের্তো বারবেরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের কিছু শিল্পীর আমন্ত্রণ বাতিল করতে বলা হয়েছে, তবে আমরা সেটা করব না। যারা আসতে চান, তারা আসবেন। তবে আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, গাজা ও ফিলিস্তিনে যা ঘটছে, তাতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। শিশুদের মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করছে। এই যুদ্ধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থামা উচিত।’
তবে উৎসবের প্রথম দিন উৎসবের প্রধান জুরি আলেকজান্ডার পেইন গাজা প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে সিনেমা বিচার করতে এসেছি। আমার রাজনৈতিক মতামত অনেকের সঙ্গেই মিলে যাবে, তবে সেগুলো ব্যক্ত করার জায়গা এটা নয়।’