
দেশে প্রায় ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কোনো না কোনো ব্যথাজনিত সমস্যায় ভুগছেন— কেউ গিরা (জয়েন্ট) ব্যথায়, কেউ পেশী বা হাড়ের সমস্যায়। এ তথ্য উঠে এসেছে ‘কমিউনিটি ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অব রিউমেটিক ডিজিজ’ (কপকর্ড) পরিচালিত এক গবেষণায়।
শনিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে বাতব্যথা রোগীদের সচেতনতামূলক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে প্রফেসর নজরুল রিউমাটোলজি ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ (PNRFR) ট্রাস্ট, এটি তাদের নবম আয়োজন।
চিকিৎসকরা জানান, দেশে বাতব্যথা ও রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও সেই তুলনায় দক্ষ রিউমাটোলজিস্ট বা বাতরোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যা খুবই কম। এর ফলে অনেক রোগী অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। সরকারকে এই খাতে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
অনুষ্ঠানে বাতব্যথা সংক্রান্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন PNRFR ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও এমএইচ শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নীরা ফেরদৌস। তিনি বলেন, দেশে রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আনুমানিক ১৭.৫ লাখ। প্রতি বছর গড়ে সাড়ে ৬ হাজার নতুন রোগী যুক্ত হচ্ছেন। বিশ্বে প্রতি লাখে প্রায় ৪০ জন নারী এবং ২০ জন পুরুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্পন্ডাইলো আর্থারাইটিসে ভুগছেন সাড়ে ১২ লাখ মানুষ, গাউট রোগে ভুগছেন প্রায় সাড়ে ৫ লাখ, এবং হাইপার ইউরিসেমিয়াতে (অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড) ভুগছেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
তিনি আরও জানান, গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মানসিক রোগের পরেই বাতরোগ শারীরিক অক্ষমতার দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন PNRFR ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও এশিয়া প্যাসিফিক লীগ অব অ্যাসোসিয়েশন ফর রিউমাটোলজির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে প্রতি চারজন মানুষে একজন দরিদ্রতার শিকার হচ্ছেন। এর একটি বড় কারণ চিকিৎসা ব্যয়। অথচ এই খাতে কার্যকর সহযোগিতা নেই বললেই চলে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন: অধ্যাপক ডা. নাসিম আক্তার চৌধুরী, মো. মুনির হোসেন, মেজর জেনারেল কাজী ইফতেখার-উল-আলম, শেখ নাহার মাহমুদ।