
নদী ও পরিবেশ দূষণকারী হোটেলকে শুধু জরিমানা নয় বরং দূষণে যুক্ত দুয়েকটা করে হোটেল বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (৩০ আগস্ট) কক্সবাজার সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ‘হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক বাঁকখালী নদী দখলমুক্তকরণের লক্ষে বিশেষ সমন্বয় সভা’ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নদী পরিবেশের প্রাণ। পরিবেশ বাঁচাতে হলে নদীর দখল ও দুষণমুক্ত করতে হবে। কক্সবাজারে যেসব হোটেলের নিজস্ব বৈর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই, তারা নদী দূষণ করছে। সেটা প্রমাণ পেলে শুধু জরিমানা করা হয়। আমার পরামর্শ হলো শুধু জরিমানা করলে হবে না, দূষণে যুক্ত দুয়েকটা করে হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হউক- এতে পরিবেশের ক্ষতি রোধ সম্ভব।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাবার পর কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর দখলদারদের সমন্বিত তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে। গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে নদীটিকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা ও সে মোতাবেক ব্যবস্থাপনা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনার পরই কক্সবাজার সফরে এসেছেন বলে উল্লেখ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
তথ্যমতে-হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, বাঁকখালী নদীর বর্তমান প্রবাহ এবং আরএস জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণপূর্বক নদীটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। নদীর সীমানায় বিদ্যমান দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত করে আগামী ৪ মাসের মধ্যে তা উচ্ছেদের ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি পূর্বে প্রদত্ত রুল চূড়ান্তকরণের মাধ্যমে নদী এবং নদী সংলগ্ন এলাকা ভিন্ন উদ্দেশ্যে ইজারা প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে, নদী এলাকার ম্যানগ্রোভ বন ফিরিয়ে আনতে এবং নদী এলাকায় ইতোপূর্বে প্রদান করা সকল ইজারা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রায় অনুযায়ী, নদীটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়মিত তদারকির স্বার্থে মামলাটিকে আদালত চলমান মামলা হিসেবে ঘোষণা করে প্রতি ৬ মাস পর পর অর্থাৎ প্রতিবছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে উল্লিখিত নির্দেশ প্রতিপালন প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।
নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুধু সৈকতের বালুচর নয়, বাঁকখালী নদীও পর্যটনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠবে এমন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দেশের বৃহত্তর জলবায়ু উদবাস্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার মাঝামাঝি এ স্থান ঘিরে পরিকল্পনায় এগুনো গেলে পর্যটনের অন্যতম স্পট করা সম্ভব।