
দেশজুড়ে শিশু-কিশোরদের জন্য নির্ধারিত টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, তা এক মাসের বেশি পিছিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সহকারীদের চলমান আন্দোলনের কারণে মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ইপিআই ব্যবস্থাপক ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানান, স্বাস্থ্য সহকারীরা মাঠে না থাকলে টিকা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা অসম্ভব। এই কারণে নতুন সময় নির্ধারণ করে ১২ অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় গত ১৪ আগস্ট এবং আনুষ্ঠানিক নোটিশ ইস্যু হবে ১৭ আগস্ট।
নতুন সূচি অনুযায়ী প্রথম ১০ দিন দেশের বিভিন্ন স্কুলে ক্যাম্প আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। বাকি আট দিন স্কুলে অনুপস্থিত বা স্কুলবহির্ভূত শিশুদের স্থানীয় টিকাকেন্দ্রে ডাকা হবে। জন্ম নিবন্ধন কিংবা পিতামাতার মোবাইল নম্বর দিয়েও অনলাইনে নিবন্ধন করার সুযোগ থাকবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোর এই ইনজেকটেবল টিকা পাবে, যা তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত টাইফয়েড থেকে সুরক্ষা দেবে। টিকাগুলো গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহায়তায় আনা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইফয়েডের উচ্চ সংক্রমণহার বিবেচনায় এই কর্মসূচি সময়মতো শুরু হওয়া অত্যন্ত জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতি লাখে ১,০০০-এর বেশি শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়, যা বৈশ্বিক হারে অন্যতম উচ্চ।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য সহকারীরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন, পদোন্নতি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন, যার প্রভাব পড়ছে মাঠপর্যায়ের টিকাদান কার্যক্রমে। কর্মকর্তারা বলছেন, সমঝোতা ছাড়া জাতীয় পর্যায়ের এমন বড় কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, টাইফয়েড একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যা দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। প্রাথমিক উপসর্গ অস্পষ্ট হওয়ায় শিশুদের মধ্যে এটি দ্রুত জটিল আকার নিতে পারে। তবে সময়মতো টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে।