
তীব্র খরার কারণে ইরাকের বৃহত্তম জলাধারে পানির স্তর কমে যাওয়ার পর ৪০টি প্রাচীন সমাধি আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির উত্তরে দুহোক প্রদেশের খানকে অঞ্চলে মসুল বাঁধ জলাধারের ধারে ২৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো সমাধিগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) দুহোকের পুরাকীর্তি বিভাগের পরিচালক এবং স্থানটির প্রত্নতাত্ত্বিক কাজের প্রধান বেকাস ব্রেফকানি বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমরা প্রায় ৪০টি সমাধি আবিষ্কার করেছি।’
তার দল ২০২৩ সালে এলাকাটিতে প্রথম জরিপ করেছিল। তখন মাত্র কয়েকটি সমাধির অংশ দেখা গিয়েছিল। ব্রেফকানি বলেন, এই বছর যখন পানির স্তর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে, তখন তারা সাইটটিতে কাজ করতে সক্ষম হন।
‘খরা আমাদের খননকাজ করার সুযোগ করে দেয়’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা একই এলাকায় হাজার হাজার বছর আগের নানা ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেছেন। টানা পাঁচ বছর ধরে ইরাকে চলমান খরার ফলে এসব ঘটছে।
ব্রেফকানি বলেন, ‘খরা কৃষি এবং বিদ্যুতের মতো অনেক কিছুর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। কিন্তু আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিকদের জন্য…এটি আমাদের খননকাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে।’
ব্রেফকানির মতে, নতুন আবিষ্কৃত সমাধিগুলো হেলেনীয় যুগের বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এলাকাটি আবার ডুবে যাওয়ার আগে তার দল সমাধিগুলো খনন করে আরও গবেষণা ও সংরক্ষণের জন্য দুহোক জাদুঘরে সেগুলো স্থানান্তর করার জন্য কাজ করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ইরাক ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, দীর্ঘস্থায়ী জলের ঘাটতি এবং বছরের পর বছর খরার মুখোমুখি হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়েছে, চলতি বছরটি ১৯৩৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে শুষ্ক বছরগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে। এর ফলে জলের মজুদ পূর্ণ ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।
একসময়ের শক্তিশালী নদী টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিসের প্রবাহ নাটকীয়ভাবে কমার জন্য ইরাক প্রতিবেশী ইরান এবং তুরস্কে নির্মিত উজানের বাঁধগুলোকে দায়ী করে। এই নদীগুলোর প্রবাহ হাজার হাজার বছর ধরে ইরাকে সেচের চাহিদা পূরণ করে আসছিল।