
বিশ্ব ক্রিকেটে তোলপাড় ফেলে দেওয়া ভারতের ১৪ বছর বয়সী বিস্ময়-বালক বৈভব সুরিয়াভানশি এবার দেশটির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় শিশু পুরস্কার’-এর জন্য মনোনীত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুরিয়াভানশিকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা ও অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গ্রহণ করার জন্য সুরিয়াভানশি বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন, যার ফলে বিজয় হাজারে ট্রফিতে বিহারের হয়ে আজকের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে তার মাঠে নামা হচ্ছে না।
সুরিয়াভানশির শৈশবের কোচ মানিশ ওঝা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন যে, রাষ্ট্রপতি ভবনের এই অনুষ্ঠান শেষে বাঁহাতি এই ওপেনার আর বিহার দলের সঙ্গে যোগ দেবেন না। এর পরিবর্তে তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে ভারতীয় যুব দলের প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
উল্লেখ্য যে, গত বুধবার বিজয় হাজারে ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে রাজস্থানের বিপক্ষে ১৫টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ৮৪ বলে ১৯০ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে মাত্র ৩৬ বলে শতরান পূর্ণ করে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি ৫৯ বলে দেড়শ রান করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি।
রেকর্ড আর বৈভব সুরিয়াভানশি এখন একে অপরের প্রতিশব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর থেকেই ভারতের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে তিনি একের পর এক রূপকথার মতো পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে আইপিএলের নিলামে দল পাওয়ার পর রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে গত মৌসুমে ৭ ম্যাচে ২০৬ দশমিক ৫৫ স্ট্রাইক রেটে ২৫২ রান করে তিনি ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন।
এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড সফরে যুব ওয়ানডে সিরিজে সেঞ্চুরি এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৪ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৫ রান করে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ১৫টি যুব ওয়ানডে খেলে ১৫৮ দশমিক ৭৯ স্ট্রাইক রেটে ৭৬৭ রান সংগ্রহ করেছেন এই উদীয়মান তারকা।
সাম্প্রতিক সময়েও সুরিয়াভানশির ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটছে। কদিন আগে যুব এশিয়া কাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৪টি ছক্কার সাহায্যে ৯৫ বলে ১৭১ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এর আগে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতেও বিহারের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন এই কিশোর প্রতিভা। তার এই ধারাবাহিক ও বিধ্বংসী ব্যাটিং প্রদর্শনী তাকে ভারতের অন্যতম সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারে পরিণত করেছে।
রাষ্ট্রীয় এই সম্মাননা প্রাপ্তির মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারে এক নতুন পালক যুক্ত হলো, যা তাকে আসন্ন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পারফর্ম করতে অনুপ্রাণিত করবে।