
৩৬ বছরের অপেক্ষা, নিন্দুকের বুলি ও চার ফাইনাল হারের আক্ষেপ নিয়ে এক সোনালি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন নিয়ে তিন বছর আগে কাতারে পাড়ি জমিয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে শিরোপার খুব কাছে গিয়েও ফিরতে হয়েছিল বুকভরা যন্ত্রণা নিয়ে। মেসিবাহিনী সেই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে পা রেখেছিল মরুর বুকে।
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে পুঁচকে সৌদি আরবের কাছে হারের পর সেই স্বপ্ন প্রায় পরিণত হতে যাচ্ছিল দুঃস্বপ্নে। তবে নেতা মেসি, মাস্টারমাইন্ড লিওনেল স্কালোনি ও কিছু অদম্য তরুণ ফুটবলার, যারা পণ করেছিল, যে করেই হোক স্বপ্নের সোনালি ট্রফি উপহার দিবেন নিজেদের ‘অনুপ্রেরণা’ লিওনেল মেসিকে।
১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামের সেই রাত যুগ থেকে যুগান্তর মনে রাখবে কোটি ফুটবল ভক্ত। স্বপ্নের ফাইনালে আলবিসেলেস্তের প্রতিপক্ষ ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। যাদের কাছে হেরে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে রাউন্ড ষোলো থেকে অশ্রুশিক্ত চোখে বাড়ি ফিরেছিল মেসিবাহিনী।
তবে যে অদম্য ইচ্ছে শক্তি নিয়ে মরুর দেশে পা রাখে আর্জেন্টিনা, টাইব্রেকারে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা আক্ষেপ কাটায় আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ষোলোকলা। তার আগে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হওয়া ১৯৮৬ বিশ্বকাপে দিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে আকাশি-নীলরা জয় করেছিল নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা।
দরজায় কড়া নাড়ছে আরও একটি বিশ্বকাপ। আগামী ১২ জুন পর্দা উঠছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো বিশ্বকাপের। ৪৮ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের বিশ্বকাপে হট ফেভারিটের তকমা গায়ে জড়িয়ে মাঠে নামবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ-খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপে এখন বিশ্ব জুড়ে কোটি আর্জেন্টাইন ভক্ত-সমর্থকদের মুখে একটাই কথা-মেসির হাতে বিশ্বকাপ, হবে নাকি আরেকবার।
শুধু ভক্ত-সমর্থকরাই নয়, আর্জেন্টিনা দলের প্রতিটি খেলোয়াড়, সবারই স্বপ্ন মেসির হাতে আরও একটি বিশ্বকাপ তুলে দিয়ে বিশ্ব কিংবদন্তিকে রাজকীয় বিদায় দেওয়া। খোদ মেসিও চান নিজের শেষটা রাঙাতে। আগামী ২০ জুন মেটলাইফ স্টেডিয়ামে পুনরাবৃত্তি করতে চান ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বরের সেই ঐতিহাসিক রাতের।