
এ ১০০ কোটি ডলার বা এর বেশি সম্পদের মালিকদের বলা হয় বিলিয়নেয়ার। বিলিয়নেয়ারের মধ্যে অনেকেই বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। আবার উত্তরাধিকার সূত্রে নিকটজনের কাছ থেকে পাওয়া সম্পদের জোরেও বিলিয়নেয়ার হয়েছেন অনেকে। বিশ্বব্যাপী বিলিয়নেয়ারদের সম্পদের গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করে আসছে সুইস ব্যাংক ইউবিএস। ব্যাংকটির সর্বশেষ প্রকাশিত ‘ইউবিএস বিলিয়নেয়ার অ্যাম্বিশনস রিপোর্ট ২০২৫’ অনুসারে, বিশ্ব জুড়ে বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা এখন ২ হাজার ৯১৯। আগের বছরের প্রতিবেদনে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৮২। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিশ্বব্যাপী বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। একই সময় তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারে। সংস্থাটির হিসাবে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্ব-অর্জিত সম্পদে নতুন করে বিলিয়নেয়ারের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ১৯৬ ধনকুবের, যাদের সম্মিলিত সম্পদের আকার ৩৮ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার।
এছাড়া উত্তরাধিকার সূত্রে নতুন বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা বাড়ার গতিও এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গত এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে বিশ্বব্যাপী উত্তরাধিকার সূত্রে নতুন বিলিয়নেয়ার হয়েছেন ৯১ জন, যা এ হিসাব শুরুর পর থেকে রেকর্ড সর্বোচ্চ। এ সময়ের মধ্যে নতুন এ বিলিয়নেয়ারদের হাতে এসেছে ২৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। উত্তরাধিকার সূত্রে নতুন বিলিয়নেয়ারের হাতে সম্পদ হস্তান্তরের পরিমাণের দিক থেকেও এটি নতুন রেকর্ড। উত্তরাধিকার সূত্রে নতুন বিলিয়নেয়ারদের মধ্যে ৬৪ জন পুরুষ ও ২৭জন নারী।
ইউবিএসের নির্বাহী বেঞ্জামিন ক্যাভাল্লি বলেন, ‘এ প্রবণতা প্রমাণ করছে, বিশ্বব্যাপী ধনী পরিবারগুলোর সম্পদ হস্তান্তরের ঢেউ আরো তীব্র হচ্ছে। আগামী ১৫ বছরে অন্তত ৫ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার উত্তরাধিকার সূত্রে হাতবদল হতে পারে।’
পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ সবচেয়ে বেশি উত্তরাধিকার সম্পত্তি হস্তান্তর হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর থাকবে ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ড। তবে উচ্চ জীবনমান, নিরাপত্তা, ভূরাজনৈতিক ও করনীতির কারণে বিশ্ব জুড়ে ধনীদের মধ্যে অভিবাসনের চাহিদা বাড়ছে। সম্পদ বৃদ্ধির হারের দিক থেকে নারী বিলিয়নেয়াররা পুরুষদের ছাড়িয়ে গেছেন বলে ইউবিএসের তালিকায় উঠে এসেছে। ব্যাংকটির হিসাব অনুযায়ী, বিশ্ব জুড়ে নারী বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা এখন ৩৭৪। এক বছরে তাদের গড় সম্পদ ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৫২০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। পুরুষ বিলিয়নেয়ারদের ক্ষেত্রে এ বৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ২ শতাংশ। নারী বিলিয়নেয়ারদের সম্পদ বৃদ্ধিতে ভোক্তা ও খুচরা বাজার খাত প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।