
বাদামী চর্বি- সাদা চর্বির মতো ভরে বসে না, বরং ক্যালোরি পোড়িয়ে শরীরকে উষ্ণ রাখে। শিশুদের শরীরে প্রচুর থাকে এটি, কারণ তাদের পর্যাপ্ত পেশী নেই; তাই তারা চিনি ও চর্বি থেকে তাপ উৎপাদনের জন্য বাদামী চর্বির উপর নির্ভর করে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যদিও কম থাকে, তবু গবেষণা দেখায় এটি বিপাকীয় স্বাস্থ্য ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে।
বাদামী চর্বির কোষে প্রচুর মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে, যা খাদ্য থেকে শক্তি সরাসরি তাপে রূপান্তরিত করে। নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল সাইমন্ডস বলেন, ‘উদ্দীপিত হলে বাদামী চর্বি প্রতি ইউনিট ভরে অন্যান্য টিস্যুর তুলনায় ৩০০ গুণ বেশি তাপ উৎপাদন করতে পারে।’ ইঁদুর ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের উপর গবেষণা দেখিয়েছে, বাদামী চর্বি স্থূলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের ক্ষেত্রে, ঠান্ডা সংস্পর্শ- যেমন হালকা বরফের সাঁতার বা ক্রায়োথেরাপি, বাদামী চর্বি সক্রিয় করতে পারে। নেদারল্যান্ডসের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১০ দিন থাকার পর বাদামী চর্বির কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে, কফি বা মশলাদার খাবারেও কিছু মাত্রায় তা উদ্দীপিত হতে পারে, তবে দৈনিক অতিরিক্ত কফি গ্রহণ প্রায় অসম্ভব।
যদিও মানুষের শরীরে বাদামী চর্বির পরিমাণ খুব কম, এটি ওজন কমাতে সরাসরি যথেষ্ট নয়, তবে বিপাকীয় স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। যারা নিয়মিত ঠান্ডার সংস্পর্শে আসে, তাদের রক্তের গ্লুকোজ দ্রুত ব্যবহার হয়, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে এবং কোলেস্টেরল ভালো থাকে।
রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের পল কোহেন বলেন, ‘বাদামী চর্বি সক্রিয়করণ স্থূলতার চিকিৎসার চেয়ে বিপাকীয় স্বাস্থ্য ও বার্ধক্যজনিত জটিলতা কমাতে বেশি কার্যকর হতে পারে।’ তবে এটি কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম জীবনধারা অপরিহার্য।