
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে করদাতাদের সাড়া প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার ফলে এখন পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ তথ্য জানায়।
গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য www.etaxnbr.gov.bd
পোর্টালের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিশেষ আদেশে জানিয়েছে যে এ বছর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সব শ্রেণির করদাতার জন্য—তবে এর বাইরে রাখা হয়েছে ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধির মাধ্যমে রিটার্ন দাখিলকারীরা এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা।
২০২৫-২৬ কর বছরে এসব শ্রেণির করদাতাদের অনলাইন রিটার্নের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও, তারা চাইলে স্বেচ্ছায় অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
অন্যদিকে, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধনজনিত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা যদি অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে না পারেন, তবে তিনি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে যুক্তিসহ আবেদন করতে পারবেন। আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তাকে পেপার রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দেওয়া হবে। এ বছর করদাতার অনুমোদিত প্রতিনিধিও তাঁর পক্ষে অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক না হলেও তারা চাইলে অংশগ্রহণ করতে পারেন। পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ই-মেইলসহ প্রয়োজনীয় তথ্য [email protected]
ঠিকানায় পাঠালে আবেদনকারীর ই-মেইলে OTP ও রেজিস্ট্রেশন লিংক পাঠানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি করদাতারাও সহজেই ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।
কোনো কাগজপত্র বা দলিলাদি আপলোড না করে করদাতারা তাদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসে ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করে ই-রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন বিধায় দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি করদাতার কাছে ই-রিটার্ন দাখিল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এনবিআর জানায়, ই-রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত বছরের মতো এ বছরও করদাতাদের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। করদাতা ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বছর করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিদেরকেও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। ওই কল সেন্টারের ০৯৬৪৩৭১৭১৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতারা e-Return সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন।
এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd-এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা e-Return সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন।
অধিকন্তু সারা দেশের সব কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প ডেস্ক থেকে অফিস চলাকালে ই-রিটার্ন দাখিলবিষয়ক সব সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সম্মানিত করদাতারা নিজ নিজ কর অঞ্চলে সশরীর উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিলের যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছেন।
এনবিআর জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব করদাতাকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে।