
স্টিভ ম্যাকক্লেরেনের জ্যামাইকার সঙ্গে ড্র করার পর ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্র কুরাসাও প্রথমবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে। এতে দেশটি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে আইসল্যান্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। দেড় লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপটির আয়তন যুক্তরাজ্যের স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপ অঞ্চল ‘আইল অব ম্যানের’ চেয়েও ছোট।
কিংস্টনে ম্যাচটি জিতলে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারতো। কিন্তু কুরাসাও এর সঙ্গে ইনজুরি টাইমে পাওয়া একটি পেনাল্টি ভিএআরের মাধ্যমে বাতিল হওয়ার পর দলটি বিশ্বকাপের টিকিট হারায়। ম্যাচ শেষে জ্যামাইকা দলের প্রধান কোচ ম্যাকক্লেরেন দলের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে, ব্যক্তিগত কারণে মাঠে উপস্থিত না থাকলেও কুরাকাও কোচ ডিক অ্যাডভোকাট ৭৮ বছর বয়সে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক কোচ হয়ে টুর্নামেন্টে থাকবেন। এর আগে ২০১০ সালে গ্রিসের দায়িত্বে থাকা অটো রেহাগেল ছিলেন সবচেয়ে বয়স্ক (৭১)।
২০১০ সালে নেদারল্যান্ডস রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর কুরাসাওয়ের ফুটবলে এগিয়ে যাওয়ার যাত্রা শুরু। এক দশক আগে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৫০তম থাকা দলটি এখন ৮২তম। ২০২৬ বিশ্বকাপের ৪৮ দলীয় সম্প্রসারিত ফরম্যাট তাদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। তারা কেপ ভার্দে, উজবেকিস্তান এবং জর্ডানের সঙ্গে বিশ্বকাপের নতুন মুখ হিসেবে যোগ দেবে।
হাডার্সফিল্ড, রেঞ্জার্স এবং বার্মিংহামের সাবেক খেলোয়াড় জুনিনহো বাকুনা বলেন, ‘এটা পাগলামি। কয়েক বছর আগেও যা কল্পনা করা যেত না, সে স্বপ্ন আজ সত্যি।’
বাছাইপর্বে ১০ ম্যাচে সাতটিতে জিতে অপরাজিত থেকে শেষ করে কুরাসাও। তবে শেষ ম্যাচে নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি হয়। অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে আইজ্যাক হেইডেনের ফাউলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। কিন্তু ভিএআরের পরামর্শে সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যায়, আর সেখানেই ইতিহাস রচনা হয়।
এদিকে, কনকাকাফ অঞ্চল থেকে কুরাসাওয়ের সঙ্গে বিশ্বকাপে উঠেছে হাইতি ও পানামা। নিকারাগুয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে ফিরছে হাইতি।
তিন দফায় নেদারল্যান্ডস এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া, বেলজিয়াম, রাশিয়া, সার্বিয়া ও ইরাকের দায়িত্ব সামলানোর পর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কুরাকাওয়ের দায়িত্ব নেন অ্যাডভোকাট। অর্থবিতর্ক মেটার পরই তিনি দলটির লক্ষ্য স্থির করেন ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার।
বাকুনা বলেন, ‘অ্যাডভোকাট বড় নাম, বড় কোচ। তার উপস্থিতি দলকে বদলে দিয়েছে।’
দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় নেদারল্যান্ডসে জন্মগ্রহণ করলেও পারিবারিক যোগসূত্রের কারণে কুরাসাওয়ের হয়ে খেলছেন। দলে আছেন তাহিথ চং, সন্টজে হ্যানসেন, আর’জানি মার্থা ও জশুয়া ব্রেনেটের মতো ইউরোপভিত্তিক ফুটবলাররা।
জুনিনহো বাকুনা বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-২১ পর্যায়ে নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলার পরও তিনি কুরাসাও বেছে নিয়েছি পরিবার ও বাস্তবতার কারণে। আমার বয়সী অনেক খেলোয়াড় ডাচ দলে সুযোগ পেলেও আমি পাইনি। তাই ভাইয়ের সঙ্গে কুরাসাওয়ের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিই।’
তিনি আরও বলেন, কুরাসাওয়ের যোগ্যতা অর্জন আরও ডাচ-বংশোদ্ভূত তরুণ ফুটবলারকে তাদের দলে টানবে এবং দলকে আরও শক্তিশালী করবে।