
সিলেট টেস্টের প্রথম দিন থেকে ফেভারিটের তকমা ছিল স্বাগতিকদের গায়ে। ব্যাটিং-বোলিং দুই ইউনিটে সফরকারীদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছেন টাইগার ক্রিকেটাররা। তৃতীয় দিন শেষে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুবাস নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন শান্ত-লিটন-মিরাজরা। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা। চতুর্থ দিনে লাঞ্চের পর আর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি আইরিশ ব্যাটাররা। হেরেছেন ৪৭ রানের ইনিংস ব্যবধানে।
দলগত পারফরম্যান্সে এমন জয় এসেছে বলে মনে করেছেন টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাদা পোশাকের অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর পুনরায় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম ম্যাচেই উজ্জ্বল ছিলেন টাইগার অধিনায়ক। প্রথম ইনিংসে খেলেছেন শতরানের ইনিংস। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানান, এখনোই কোনো কৃতিত্ব নিতে চান না তিনি। হতে চান লম্বা রেসের ঘোড়া।
শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি জাস্ট শুরু হয়েছে। এখনো লম্বা সময় যাওয়ার বাকি, বাট ভালো স্টার্ট হয়েছে আমি মনে করি। বাট হ্যাঁ, আমি সবসময় যেটা বলি যে আমি ব্যাটিংয়ের সময় একজন ব্যাটার হিসেবে খেলতে পছন্দ করি। আমার ভেতরে একবারের জন্যও মনে হয় না যে আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে খেলছি। চিন্তা করি যে কীভাবে একজন ব্যাটার হিসেবে অবদান করতে পারি। ঐটাই আসল ফোকাস থাকে, আর যখন ফিল্ডিংয়ে থাকি তখন আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার যে দায়িত্বগুলো আছে ঐ সেগুলো আমি চেষ্টা করি পালন করার।’
রঙিন পোশাকের নেতৃত্ব হারানোর পর হয়তো ক্ষোভেই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন শান্ত। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ায় আবারও রাজকীয় এই ফরম্যাটের নেতৃত্ব ভার কাঁধে তুলে নেন তিনি। তবে মাঝখানের সময়টা কেমন কেটেছিল? এই বিষয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘প্রথম কিছুদিন কঠিন ছিল, টু বি ভেরি অনেস্ট। বাট হ্যাঁ, তারপরে অনেকটা রিল্যাক্স হয়ে গিয়েছিলাম এবং এনজয় করেছি পুরো সময়টা, নিজেকে সময় দিয়েছি, পাশাপাশি ফ্যামিলিকে সময় দিয়েছি, দক্ষতার দিক থেকে নিজের ক্রিকেটটা আর একটু কীভাবে উন্নতি করা যায়, মানসিকভাবে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু আমি মনে করি যে ঐ সময়টা আমার খুব ভালো কেটেছে।’
অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছিল না মাহমুদুল হাসান জয়ের। তবে আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৭১ রানের ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচ-সেরা। যদিও ম্যাচ-সেরা হয়ে খুশি নন জয়। ডাবল সেঞ্চুরি করার সুযোগ পেয়েও কাজে না লাগাতে পারায় হতাশ এই টাইগার ওপেনার। ম্যাচ-সেরা হওয়ার পর জয় বলেন, ‘ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারায় একটু হতাশ লাগছে, তবে শেষ পর্যন্ত ভালোই খেলেছি। সব মিলিয়ে খুশি। মুশফিক ভাইয়ের ১০০তম টেস্ট নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। এই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো ছিল, নিজের পরিকল্পনা সহজ রাখারই চেষ্টা করেছি।’
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামী ১৯ তারিখ মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। যা দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট ম্যাচ। এই বিষয়ে শান্ত বলেন, অবশ্যই এটি অনেক বড় অর্জন। সর্বোচ্চ সম্মানটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি তিনি ১০০ টেস্টের পরও খেলা চালিয়ে যাবেন।’
এছাড়াও সিলেট টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে মুরাদ হাসানের। প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট শিকার করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট তুলে নিয়েছেন এই স্পিনার। মুরাদকে নিয়ে শান্ত বলেন, ‘হাসান মুরাদ এতদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন। বছরের পর বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো করেছেন এবং এখন তিনি সুযোগ পেয়েছেন। সে একজন কোয়ালিটি বোলার।’ এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পর মিরপুর টেস্টে এই স্পিনারের ওপর চোখ থাকবে সবার।