
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের স্বার্থ উপস্থাপনের জন্য ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) যুক্তরাষ্ট্রে একটি লবিং ফার্ম নিয়োগ করেছে। এই ফার্মটি পাকিস্তান সরকারের সঙ্গেও কাজ করে। কট্টর ডানপন্থী সংগঠনটির এই পদক্ষেপ ভারতে একটি বড় রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং তাদের আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম প্রিজমের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আরএসএস এই বছরের শুরুতে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি লবিং প্রচারণা শুরু করে। ‘স্কয়ার প্যাটন বগস’ (এসপিবি) নামক একটি লবিং সংস্থাকে ২০২৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে মার্কিন সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদের সামনে আরএসএসের স্বার্থ উপস্থাপনের জন্য ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার প্রদান করা হয়েছিল।
এসপিবি নামক লবিং সংস্থাটি পাকিস্তানের জন্য লবিস্ট হিসেবে সমসাময়িক ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে এটি ভারতে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ভারতীয় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসেও একটি পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে, কীভাবে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বহু মিলিয়ন ডলারের লবিংয়ে এসপিবি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরএসএসের একজন মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর প্রিজমের অনুসন্ধান প্রতিবেদন সম্পর্কে এক্স-পোস্টে বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ভারতে কাজ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কোনো লবিং ফার্মের সঙ্গে জড়িত নয়।’
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ আরএসএস’র তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, কয়েকদিন আগে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত স্বীকার করেছেন, আরএসএস একটি নিবন্ধিত সংগঠন নয় এবং এটি কর দেয় না। এখন আমরা জানতে পেরেছি যে, আরএসএস পাকিস্তানের একটি সরকারি লবিং বাহিনী – আমেরিকান সংস্থা ‘স্কয়ার প্যাটন বগস’কে তাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, রমেশ আরএসএস-এর বিরুদ্ধে ‘জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করার অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, ‘এটিই প্রথমবার নয় যে আরএসএস স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার, মহাত্মা গান্ধী ও ড. আম্বেদকরের বিরোধিতা করার এবং ভারতের সংবিধান ও জাতীয় পতাকার ওপর আক্রমণ করার দীর্ঘ ঐতিহ্যের সঙ্গে – জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এটি একটি ছদ্মবেশী-জাতীয়তাবাদী দল।’