Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

দেশব্যাপী ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু

দেশব্যাপী ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু দেশব্যাপী ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু
দেশব্যাপী ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু


রাজধানীসহ সারা দেশে ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে ডেঙ্গু জ্বর। এই ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও মন্ত্রণালয় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। বৃষ্টির মৌসুমে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকে। এরপর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমে যায়। নভেম্বরের পর থেকে সাধারণত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মাসে দুই-এক জন হাসপাতালে আসেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গত কয়েক বছর যাবত্ ডেঙ্গুতে মানুষ সারা বছরই আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  গত বছর থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ অস্বাভাবিক বেড়েছে। এই জন্য দায়িত্বশীল প্রশাসনের ব্যর্থতা ও জনসচেতনতার অভাব দায়ী বলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। পরিত্যক্ত পাত্রে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা সারা বছর বংশ বিস্তার করার সুযোগ পায় বলে কীটতত্ত্ববিদগণ জানান।

Advertisement

এদিকে, জ্বর হলে এনএস-১ এবং সিবিসি পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিত্সকরা। এই পরীক্ষার মাধ্যমে সহজে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত করা সম্ভব। তবে এই পরীক্ষা রাজধানী ও বিভাগীয় শহর কিংবা কোন কোন জেলা শহরে থাকলে গ্রামাঞ্চলে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। অথচ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখন গ্রামাঞ্চলে বেশি। ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতার ঘাটতি বেশি। জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে কিংবা এমনিতে দুই-এক দিন পর ডেঙ্গু কমে যায়। এ সময় ডেঙ্গু জ্বর প্রাণঘাতী রূপ ধারণ করে। আক্রান্ত ব্যক্তি ভাবছে জ্বর কমেছে তিনি সুস্থ। আসলে ডেঙ্গু ভাইরাস তখন নীরবে শক্তি সঞ্চারের কাজ করে। এরপর হঠাত্ প্রচণ্ড জ্বর, শরীর ব্যথা, রক্ত ক্ষরণসহ নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। এই ধরনের রোগীদের সময়মতো চিকিত্সা দিলে সুস্থ হয়ে যায়। বিলম্বে চিকিত্সা নেওয়ার কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের এবং মৃত্যুর হার বেড়ে চলছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকগণ সতর্ক করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে ৩০৭ জন মারা গেছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ৭৫ হাজার ৯২৬ জন। শুধু সরকারি হাসপাতাল এবং নির্ধারিত কিছু সংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়। সিংহভাগ বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর কোনো তথ্য দেওয়া হয় না কিংবা পাওয়া যায় না বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা স্বীকার করেন। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের মতে, মৃত্যু ও আক্রান্তের প্রকৃত হার আরো কয়েক গুণ বেশি হবে।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ডেঙ্গু মশা নির্মূল কিংবা চিকিত্সাসেবা নিয়ে দুইটি মন্ত্রণালয় কিংবা এর অধীনস্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনসমূহকে দায়ী করা ঠিক নয়। অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কিংবা পরিদপ্তর জড়িত রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বর পর্যায়ক্রমে মহামারির দিকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার কর্যালয়ের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটি গঠন করা জরুরি প্রয়োজন। মশা নিধন ও চিকিত্সাসেবা সহায়তায় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ও এসবের অধীনস্থ দপ্তরের সম্পৃক্ততা রয়েছে। স্থায়ীভাবে সমন্বিত কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে ডেঙ্গু নির্মূল করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ও কীটতত্ত্ববিদগণ জানিয়েছেন। তারা বলেন, এডিস মশা দুই ধরনের। একটা হলো এডিস এলবোপিকটাস। এ মশা জঙ্গলে থাকে। আরেকটি হলো এডিস ইজিপটাই। এ মশা রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে প্রকোপ বেশি। গ্রামাঞ্চলে মশক নিধন কার্যক্রম তো নেই বরং জনসচেতনতা করার জন্য স্থানীয় দায়িত্বশীল প্রশাসনের উদ্যোগ নেই।

সম্প্রতি বরগুনায় আইইডিসিআর মশার ঘনত্বের ওপরে পরীক্ষা করে। পরীক্ষা করে জরিপে উঠে এসেছে যে, বরগুনা পৌরসভায় এডিস এলবো পিকটাস মশার ঘনত্ব ৪৭.১০। ঐ জেলার সদর উপজেলার সূচকের মান ১৬৩.৪। এ জরিপ অনুযায়ী শহর থেকে গ্রামে এডিস মশার বংশ বিস্তারে ভয়ংকর অবস্থা। সাধারণ সূচকের মান ২০ হলেই ধরা হয় মশার ভয়াবহ পরিস্থিতি। এ কারণে ডেঙ্গুতে গ্রামাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগী সামাল দিতে ঢাকা মেডিক্যালসহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ও আগত রোগীদের চিকিত্সাসেবার ওপরে প্রভাব পড়ছে। চাহিদার তুলনায় হাসপাতালে তিন ভাগের এক ভাগ জনবল দিয়েই চিকিত্সাসেবার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে ডেঙ্গু সামাল দেব, নাকি অন্যান্য রোগী সামাল দেব, এ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে । যেহেতু চিহ্নিত এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু জ্বর হয়, তার এই মশা নিধন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। সারা দেশ থেকে ডেঙ্গু নিয়ে সরকারি যে তথ্য দেওয়া হয় সেটা সরকারি হাসপাতালের তথ্যের ভিত্তিতে।

আইসিডিডিআরএর একজন বিজ্ঞানী ডেঙ্গু বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বলেন, উপজেলা থেকে গ্রাম পর্যন্ত নানা ডিজাইনের বিল্ডিংসহ আধুনিকতার চাপ বাড়ছে। প্লাস্টিকের আধুনিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব প্লাষ্টিক সামগ্রীতে জমাট বাঁধা পানি এডিস মশার বংশ বিস্তার করছে। মশা নিধন ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন। জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিত্সা প্রতিজ্ঞানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে ৩ লাখ ২১ হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছে। মারা যায় ১৭০৫ জন। এরপর থেকে জোরালো কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন ছিল। এ কার্যক্রমের সঙ্গে স্বাস্থ্য এবং স্থানীয় সরকারসহ  ১১টি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসন জড়িত। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্থায়ীভাবে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধি নিয়ে মশক নিধন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনায় স্থায়ী কমিটি গঠন করা উচিত।

মেডিসিনের বিশিষ্ট চিকিত্সক ইমিরেটরস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু জ্বর  মশায় কামড়ালে হয়। এই মশা  চিহ্নিত শত্রু। এই চিহ্নিত শত্রুকে নিধন করতে না পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এডিস মশা নিধন কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য  পৃথক স্থায়ী কমিটি থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাবেন। জ্বর কমে গেলে পরবর্তী ঝুঁকি থাকে বেশি। ঐ সময় চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ডেঙ্গুর নির্ধারিত পরীক্ষাসমূহ করার পরামর্শ দেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নিয়মিত লার্ভাসাইটিং করা হচ্ছে। জনসচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, ডেঙ্গু জ্বর যে কারণে হয় সেই বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।  অন্যদিকে, ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সফি আহমেদ মোয়াজ বলেন, এ বছর ডেঙ্গুতে শিশুরা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে। চিকিত্সা নিতে বিলম্বে আসার কারণে বেশির ভাগ শক সিনড্রমে শিশুরা মারা যায়। জ্বর হলে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া এবং পরবর্তী পরীক্ষাসহ করণীয় ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তিনি জানান।

আইইডিসিআর এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, চিকিত্সা ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করলে তৃণমূল পর্যায় সব চিকিত্সা ও পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সাবসেন্টার কিংবা উপজেলায় জ্বর হলে এনএস-১ পরীক্ষা করে তাত্ক্ষণিক রোগী জানতে পারবে তার ডেঙ্গু হয়েছে কিনা। দরিদ্র রোগীরা জ্বর হলে বাড়িতেই পড়ে থাকেন। হয়তো প্যারাসিটামল ওষুধসহ নানা কিছু খান। পরবর্তী সময়ে জটিলতা দেখা দিলে জেলা শহর কিংবা বিভাগীয় শহর হাসপাতালে নিয়ে যায়।  কোথাও চিকিত্সা সম্ভব না হলে রাজধানীতে পাঠিয়ে দেয়। এসব রোগী জীবনের ঝুঁকিতে থাকেন বেশি।





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ার আশঙ্কা

নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ার আশঙ্কা

Next Post
শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল, যাত্রায় দেরি

শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল, যাত্রায় দেরি

Advertisement