
ব্রিটিশ রাজপরিবারের সাবেক সদস্য অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনসরকে (প্রিন্স অ্যান্ড্রু) যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে তলব করা হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের একটি তদন্ত কমিটি তাকে জেফ্রি এপস্টিন নথিপত্র–সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে বলেছে।
হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, এপস্টিনের সঙ্গে অ্যান্ড্রুর ‘দীর্ঘদিনের ও প্রমাণিত সম্পর্কের’ কারণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে পারেন বলে তাদের বিশ্বাস।
কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য রবার্ট গার্সিয়া বলেন, ‘ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বহু বছর ধরে আইনের হাত এড়িয়ে গেছেন। এখন সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সুযোগ এসেছে সত্য প্রকাশ করে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দেওয়ার।’
আরেক ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি সুহাস সুব্রামন্যম বলেন, ‘এপস্টিনের ভুক্তভোগীদের বক্তব্য ও ফাঁস হওয়া নথি দেখার পর স্পষ্ট হয়েছে—অ্যান্ড্রুর সহযোগিতা এখন অত্যন্ত জরুরি। তিনি যদি নির্দোষ হন, তাহলে এটাই তার নাম পরিষ্কার করার সুযোগ।
প্রিন্স অ্যান্ড্রু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে হাজির করানো সাধারণত সম্ভব নয়। তবে কেউ যদি মার্কিন মাটিতে থাকেন, তাহলে তাকে সাবপিনা (subpoena) বা আদালতের সমন পাঠিয়ে হাজির হতে বাধ্য করা যায়।
এরই মধ্যে রাজা তৃতীয় চার্লস তার ছোট ভাইয়ের রাজকীয় উপাধি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছেন। গত ৩ নভেম্বর জারি করা লেটারস পেটেন্ট–এ বলা হয়েছে, “অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনসর আর ‘হিজ রয়্যাল হাইনেস’ বা ‘প্রিন্স’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না।”
এর আগেই ইয়র্কের ডিউক উপাধি পিয়ারেজ রোল থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এপস্টিন–কাণ্ডে অ্যান্ড্রুর নাম ওঠার পর থেকেই রাজপরিবারের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে সম্প্রতি এপস্টিনের মানব পাচারের শিকার ভার্জিনিয়া জিউফ্রে–এর আত্মজীবনী প্রকাশের পর। বইটির পরদিনই বিবিসি প্রকাশ করেছে তাঁর পুরনো সাক্ষাৎকারের অপ্রচারিত অংশ, যেখানে জিউফ্রে বলেন, “ঘিসলেইন আমাকে বলেছিল—অ্যান্ড্রুর জন্যও আমাকে সেই কাজ করতে হবে, যা আমি জেফ্রির জন্য করি। আমি স্তম্ভিত হয়েছিলাম—রাজপরিবারের একজনের কাছ থেকে এটা আশা করিনি।”
অ্যান্ড্রু বর্তমানে উইনসর প্রাসাদের রয়্যাল লজে থাকেন, যেখানে তিনি গত ২২ বছর ধরে ভাড়া ছাড়া বসবাস করছেন। তার সাবেক স্ত্রী সারা ফার্গুসন–ও ১৯৯৬ সাল থেকে সেখানে থাকছেন। জানা গেছে, এখন অ্যান্ড্রু স্যান্ড্রিংহ্যামে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আর ফার্গুসনও অন্যত্র যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।