
দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯২ জনে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো দৈনিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১০১ জন ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯২৩ জনে। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৭০ হাজার ৫২৯ জন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে তিন হাজার ৩৯৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত মোট ২৯২ জন মারা গেছেন ডেঙ্গুতে। এর মধ্যে অক্টোবর মাসে সবচেয়ে বেশি ৮০ জনের মৃত্যু হয়, যা এ বছরের কোনো একক মাসে সর্বাধিক। নভেম্বরে মাত্র চার দিনেই মারা গেছেন ১৪ জন।
মাসওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু হয়, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, মার্চে কেউ মারা যাননি। এরপর এপ্রিল ও মে মাসে যথাক্রমে সাত ও তিনজনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়। জুনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ জনে, জুলাইয়ে ৪১ এবং আগস্টে ৩৯ জন মারা যান। সেপ্টেম্বর মাসে মৃত্যু হয় ৫৬ জনের।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে এখনও এডিস মশার প্রজনন অব্যাহত রয়েছে। নগর এলাকায় পানি জমে থাকা স্থানগুলোই এখন ডেঙ্গু সংক্রমণের মূল উৎস হিসেবে চিহ্নিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ঘরবাড়ি ও আশপাশে তিন দিনের বেশি পানি জমে থাকতে না দেওয়া, ফুলের টব, ড্রাম, টায়ার বা পরিত্যক্ত পাত্র পরিষ্কার রাখাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
চলতি বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও।