Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

প্রযুক্তির জগতে জেন্ডার নয়, দক্ষতাই আসল পরিচয়

প্রযুক্তির জগতে জেন্ডার নয়, দক্ষতাই আসল পরিচয় প্রযুক্তির জগতে জেন্ডার নয়, দক্ষতাই আসল পরিচয়
প্রযুক্তির জগতে জেন্ডার নয়, দক্ষতাই আসল পরিচয়


তথ্যপ্রযুক্তি খাত আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এই খাতের কিছু শাখা, যেমন হার্ডকোর নেটওয়ার্কিং, সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা ব্যাংকিংয়ের জটিল ফিনটেক সিস্টেম পরিচালনাকে অনেকেই ‘পুরুষদের কাজ’ বলে মনে করেন। এই প্রথাগত ধারণার দেওয়াল ভেঙে যে নারীরা প্রযুক্তির জগতে নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন, তাদেরই একজন আমি।

একজন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে, পরে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন অর্জন করেছি। নোকিয়া সলিউশনসের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় আট বছর টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার পর আমি যোগ দিয়েছি বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেবায়। বর্তমানে আমি ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির ডিজিটাল ব্যাংকিং ডিভিশনে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে কর্মরত আছি। ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার বিভিন্ন আধুনিক ডিজিটাল পেমেন্ট সলিউশন বাস্তবায়নে আমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছি।

Advertisement

আমার প্রতিদিনের কাজ হলো—গ্রাহকরা যেন ঘরে বসেই ব্যাংকিং সেবাগুলো সহজে এবং নিরাপদে ব্যবহার করতে পারেন তা নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (NBLipower ন্যাশনাল ব্যাংকের অ্যাপ) এবং নতুন গ্রাহক নিবন্ধনের অ্যাপগুলো ঠিকমতো চলছে কিনা তা দেখভাল করা। এই সিস্টেমগুলোর সার্ভার ম্যানেজমেন্ট, নিরাপত্তা আপডেট দেওয়া এবং এগুলো যেন ব্যাংকের মূল কোর ব্যাংকিং সলিউশনের (সিবিএস) সঙ্গে সঠিকভাবে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে, তা নিশ্চিত করা আমার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

টেকনোলজির সাথে নিজেকে গড়ে তোলাই ছিল আমার অনুপ্রেরণা। আমি যখন যশোরে বিএএফ শাহীন কলেজে পড়ি, তখন থেকেই সায়েন্সের প্রতি ঝোঁক ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্তটা সেখান থেকেই। অনেকেই হয়তো ভাবতো এই বিষয়গুলো মেয়েদের জন্য নয়, কিন্তু আমার পরিবার সবসময় আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমার মনে হয়েছে, প্রযুক্তি এমন একটা জায়গা যেখানে মেধা এবং দক্ষতার মূল্যই আসল, জেন্ডার নয়। টেলিকমিউনিকেশন আমাকে নেটওয়ার্কিং শিখিয়েছে, আর কম্পিউটার সায়েন্স আমাকে সিস্টেমের গভীরে যেতে সাহায্য করেছে।

সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নেটওয়ার্কিং-এর কাজগুলোকে অনেকেই নারীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং মনে করেন। কিন্তু এই ধারণাটা এখন অনেকটাই বদলে গেছে। দেখুন, আমার ক্যারিয়ারের শুরুটাই ছিল নেটওয়ার্ক সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। এটা সত্যি যে, সার্ভার বা নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্টে মাঝে মাঝে অফ-আওয়ারে বা ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়। কিন্তু এটা পদের দায়িত্বের অংশ, নারী বা পুরুষের বিষয় নয়। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, আমি যখন নোকিয়া সলিউশনসে টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতাম, তখন সার্ভার বা সিস্টেম ম্যানেজ করেছি। চ্যালেঞ্জ এসেছে, কিন্তু সেগুলো সফলভাবে সমাধান করার পর আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে। দক্ষতা থাকলে যেকোনো চ্যালেঞ্জই মোকাবিলা করা সম্ভব।

নোকিয়ার মতো একটি গ্লোবাল টেলিকম কোম্পানিতে প্রায় সাত বছর কাজ করার পর হঠাৎ ব্যাংকিং বা ‘ফিনটেক’ খাতে চলে আসার কারণটা একটু টেকনিক্যাল। টেলিকমিউনিকেশনের ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুই আইটি নির্ভর হচ্ছে। নোকিয়াতে আমার অভিজ্ঞতা ছিল সিস্টেম, সার্ভার আর ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে। আমি দেখছিলাম, ফিনটেক বা ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতটি বাংলাদেশে দ্রুত বড় হচ্ছে। এখানে আমার টেলিকম ও আইটি অভিজ্ঞতাকে সরাসরি গ্রাহকসেবায় রূপান্তর করার একটা বড় সুযোগ ছিল। ব্যাংকিংয়ের বিভিন্ন নতুন প্রজেক্ট হচ্ছে। এই প্রজেক্টগুলোতে সরাসরি অবদান রাখার লোভটা আমি সামলাতে পারিনি।

আমার প্রফেশনাল সার্টিফিকেটগুলো ডিজিটাল ব্যাংকিং-এর প্রজেক্টগুলোতে খুবই চমৎকারভাবে কাজে লাগে। শুধু টেকনিক্যাল জ্ঞান দিয়ে একটা প্রজেক্ট সফল করা কঠিন, আবার শুধু ম্যানেজমেন্ট জানলে টেকনিক্যাল টিমের চ্যালেঞ্জ বোঝা কঠিন। আমার প্রফেশনাল সার্টিফিকেট এর জ্ঞান আমাকে প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা করতে, রিস্ক ম্যানেজ করতে এবং বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের (যেমন ভেন্ডর, ইন্টারনাল টিম) সঙ্গে সমন্বয় করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, আমার টেকনিক্যাল জ্ঞান (যেমন কোর ব্যাংকিং সিস্টেম বা নেটওয়ার্কিং) আমাকে বুঝতে সাহায্য করে যে ঠিক কোথায় সমস্যা হতে পারে বা একটা নতুন ফিচার চালু করতে টেকনিক্যালি কী কী করা প্রয়োজন। এই দুইয়ের সমন্বয় থাকায় আমি টিম এবং ভেন্ডরের সঙ্গে অনেক সহজে কাজ করতে পারি।

২০১৫-২০১৬ সালের দিকে আমি যখন ক্যারিয়ার শুরু করি, তখন টেকনিক্যাল টিমগুলোতে নারী সহকর্মীর সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই চিত্রটা খুব দ্রুত বদলেছে। বিশেষ করে ন্যাশনাল ব্যাংকে আমার ডিজিটাল ব্যাংকিং টিমে আমরা বেশ কয়েকজন নারী একসাথে কাজ করছি। আমি বলবো, পরিবেশ এখন অনেক বেশি সাপোর্টিভ। প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বুঝতে পারছে যে, একটি বৈচিত্র্যময় টিম ভালো প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারে। হ্যাঁ, এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, তবে আমি খুবই আশাবাদী।

সবশেষে, যে মেয়েরা বা ছাত্রীরা এখন ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার সায়েন্স পড়ছে, কিন্তু আইটি বা ফিনটেক-এ ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধা বা ভয়ে আছে, তাদের জন্য আমার প্রধান পরামর্শ তিনটি:

১. ভয় পাবেন না: কোনো কাজই নারী বা পুরুষের জন্য আলাদা করে তৈরি হয়নি। আপনার যদি আগ্রহ থাকে, তবে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে আসুন।

২. দক্ষতা অর্জন করুন: শুধু একাডেমিক পড়াশোনা নয়, প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন অর্জনের চেষ্টা করুন। এগুলো আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে।

৩. শেখা বন্ধ করবেন না: টেকনোলজি প্রতিদিন বদলাচ্ছে। আমি টেলিকম থেকে ফিনটেকে এসেছি। আপনাকেও নতুন কিছু শেখার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।

যদি আপনার প্যাশন থাকে এবং আপনি পরিশ্রম করতে রাজি থাকেন, তবে এই সেক্টরে আপনার সাফল্য কেউ আটকাতে পারবে না।





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ত্যাগ না করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা নয়: খামেনি

ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ত্যাগ না করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা নয়: খামেনি

Next Post
নেপালের হিমালয়ে তুষারধসে তিন পর্বতারোহীর মৃত্যু, নিখোঁজ ৮

নেপালের হিমালয়ে তুষারধসে তিন পর্বতারোহীর মৃত্যু, নিখোঁজ ৮

Advertisement