
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ও শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন। তিনটি পৃথক জরিপে দেখা গেছে, মামদানি কুমোর তুলনায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত এগিয়ে।
কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের বুধবার প্রকাশিত এক জরিপ অনুযায়ী, মামদানি বর্তমানে কুমোর চেয়ে ১০ শতাংশ এগিয়ে আছেন। জরিপে মামদানির সমর্থন ৪৩ শতাংশ, কুমোর ৩৩ শতাংশ এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ১৪ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। কয়েক সপ্তাহ আগের জরিপে মামদানির সমর্থন ছিল ৪৬ শতাংশ ও কুমোর ৩৩ শতাংশ। তবে মেয়র এরিক অ্যাডামস নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর কুমোর অবস্থান কিছুটা শক্ত হয়েছে।
কুইনিপিয়াকের সহকারী পরিচালক মেরি স্নো বলেন, ‘জোহরান মামদানি বর্তমানে অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে এগিয়ে থাকলেও এখনো কিছু অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। অনেক ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, যা শেষ মুহূর্তে ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।’
এমারসন কলেজ, পিক্স ১১ ও দ্য হিলের যৌথ জরিপে মামদানিকে আরও বেশি ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। সেখানে মামদানির সমর্থন ৫০ শতাংশ, কুমোর ২৫ শতাংশ এবং স্লিওয়ার ২১ শতাংশ। এই জরিপে মামদানির সমর্থন গত মাসের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে কুমোর সমর্থন ৩ শতাংশ কমে এসেছে।
ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে কুমোকে হারানোর পর কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে মামদানির জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের মধ্যে তার সমর্থন ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে। মারিস্ট ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ওপিনিয়নের সর্বশেষ জরিপেও মামদানি কুমোর চেয়ে ১৬ শতাংশ এগিয়ে আছেন—মামদানি ৪৮ শতাংশ, কুমো ৩২ শতাংশ এবং স্লিওয়া ১৬ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন।
তরুণ ভোটারদের মধ্যেও মামদানির বিপুল জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে। মারিস্ট জরিপে দেখা যায়, ৪৫ বছরের নিচের ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন ৬৪ শতাংশ, যেখানে কুমোর পক্ষে ২১ শতাংশ। তবে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব ভোটারদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায় সমান—কুমো ৩৯ শতাংশ এবং মামদানি ৩৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। উদারপন্থী ভোটারদের মধ্যে মামদানি এগিয়ে থাকলেও মধ্যপন্থীদের মধ্যে কুমো সামান্য এগিয়ে আছেন। রক্ষণশীল ভোটারদের ৪৫ শতাংশ সমর্থন রয়েছে রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়ার পক্ষে।
আগামী ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে মামদানি এক সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করছেন—একদিকে তার দীর্ঘদিনের ফিলিস্তিনপন্থী ও ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান, অন্যদিকে বিশাল ইহুদি ভোটারগোষ্ঠীর সমর্থন বজায় রাখার প্রচেষ্টা।
তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে একাধিক প্রগতিশীল ইহুদি সংগঠন, যেমন বেন্ড দ্য আর্ক, জিউইশ ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) অ্যাকশন এবং জিউস ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস (জেএফআরইজে)। এসব সংগঠন গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের ভূমিকার সমালোচনা করেছে এবং মামদানির প্রচারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, নিউইয়র্কে বসবাসরত ইহুদি ভোটারদের মধ্যেও মামদানি এগিয়ে আছেন—জেনিথ রিসার্চের এক জরিপ অনুযায়ী, তার সমর্থন কুমোর চেয়ে অন্তত ১০ শতাংশ বেশি।
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	