
একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিবন্ধনের নিয়ম এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের পর কোনো এনআইডিতে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত থাকলে অতিরিক্ত সিমগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসি সম্প্রতি জারি করা এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো সর্বোচ্চ ১০টি সিম রেখে অতিরিক্ত সিমগুলো সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে ডি-রেজিস্টার বা মালিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন। সময়সীমা শেষে কমিশন দৈবচয়নের (র্যান্ডম সিলেকশন) মাধ্যমে অতিরিক্ত সিমগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করবে।
এছাড়া, গ্রাহকরা সহজেই জানতে পারবেন তাদের এনআইডিতে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে। এজন্য যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে *16001# ডায়াল করে এনআইডির শেষ চারটি সংখ্যা পাঠালেই সংশ্লিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, অবৈধ সিম ব্যবহার, প্রতারণা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমিশনের ভাষ্য, সঠিক মালিকানা নিশ্চিত করতে ও সিম নিবন্ধন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও নিরাপদ করতে গ্রাহকদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘দৈবচয়ন’ বা র্যান্ডম সিলেকশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, অতিরিক্ত সিম বাতিলের ক্ষেত্রে কোনো মানবিক সিদ্ধান্ত বা প্রভাবের সুযোগ থাকবে না। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে কম্পিউটার অ্যালগরিদমের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেখানে কোনো নির্দিষ্ট অগ্রাধিকার নয়, বরং এলোমেলোভাবে সিম বেছে নিয়ে বাতিল করা হবে। অর্থাৎ, কারও নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে, অতিরিক্ত সিমগুলোর কোনটি বাতিল হবে তা মানুষ নয়, বরং কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করবে।
বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে সক্রিয় মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। অথচ প্রকৃত মোবাইল গ্রাহক মাত্র ৬ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহকের নামে ৫টির কম সিম রয়েছে, প্রায় ১৬ শতাংশ গ্রাহকের নামে ৬ থেকে ১০টি সিম, আর মাত্র ৩ শতাংশ ব্যবহারকারী ১১টির বেশি সিম ব্যবহার করছেন।