
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানকে ‘গণহত্যা’ এবং ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ মন্তব্য করে আলোচনায় আসা স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যাথরিন কনলি এখন আয়ারল্যান্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট।
রোববার (২৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়ে আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তিনি গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার তীব্র সমালোচনা করেছেন। নির্বাচনে তাকে উগ্র বামপন্থি দলগুলো সমর্থন দিয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬৮ বছর বয়সী কনলি ৬৩ শতাংশ ভোট পান, যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফিনে গেল দলের হিদার হামফ্রেস পান ২৯ শতাংশ ভোট। বিজয়ী হওয়ার পর কনলি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি শান্তির বাণী প্রচার করতে চাই। নিরপেক্ষতার বাণী প্রচার করতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো হুমকিগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবার কথা শুনতে এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে চাই। প্রয়োজনের সময় সরব থাকতে চাই। সবাই মিলে নতুন দেশ গড়তে চাই যেখানে সবার মূল্যবোধ সম্মান পাবে।’
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিহল মার্টিন বলেন, ক্যাথরিন কনলিকে জনগণ ‘বিশেষ সম্মান’ দিয়েছে। উপ-প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস বলেছেন, ‘আমরা সবাই এই বিজয়ী নেতার পাশে আছি।’
আইরিশ পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধীদল সিন ফেইনও কনলির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে। দলের সভাপতি মেরি ম্যকডোনাল্ড এই বিজয়কে ‘অভাবনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এই বিজয়কে বিরোধীদেরও বিজয় বলে আখ্যা দিয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যাথরিন কনলি ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থি আয়ারল্যান্ডে দাঁড়িয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তীব্র সমালোচনা করেন। বামপন্থি বিরোধীদলগুলো তাকে সমর্থন করে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কনলির সমর্থকদের অনেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামরিক খরচ বাড়ানোর বিরোধিতা করেন। তারা গাজা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের ভূমিকার সমালোচনা করেন। বামপন্থিদের সমর্থন পাওয়া কনলির পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট মাইকেল হিগিনসও ইসরায়েলের কট্টর সমালোচক ছিলেন।
গত জুনে নিজের ফেসবুক পেজে নির্বাচনী প্রচারণার সময় এক ভিডিও বার্তায় কনলি বলেন, ‘আমরা যদি এখনই ইসরায়েলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা না দিই তাহলে ভয়ানক সমস্যা হবে।’
ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলারও নিন্দা করেছিলেন কনলি। তিনি গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা’ বলেও মন্তব্য করার পাশাপাশি ইসরায়েল সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাবেক প্রধান জেরেমি করবিনের ইসরায়েল বিরোধিতার সঙ্গে তুলনা করে অনেকে ক্যাথরিন কনলিকে ‘ডাবলিনের করবিন’ বা ‘আইরিশ জেরেমি করবিন’ বলেও ডাকেন।