
হারিকেন মেলিসা দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং একটি বড় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে হাইতি এবং জ্যামাইকাসহ উত্তর ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ভয়াবহ ঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মেলিসা হলো আটলান্টিক ঘূর্ণিঝড়, যা ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রভাব ফেলবে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) মেলিসা একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এরপর জ্যামাইকায় ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা জারি করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, এটি আগামী সপ্তাহের শুরুতে একটি বড় ঝড় হিসাবে দ্বীপে আঘাত হানতে পারে এবং এর তীব্রতা ‘ক্যাটাগরি ৪’-এ উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, ‘পরের সপ্তাহের শুরুতে দক্ষিণ হিস্পানিওলা এবং জ্যামাইকার কিছু অংশে প্রাণঘাতী ও বিপর্যয়কর আকস্মিক বন্যা-ভূমিধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
হারিকেন সেন্টারের মতে, ধীর গতির ঝড়টির কারণে জ্যামাইকায় ২৫ ইঞ্চি পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম হাইতির টিবুরন উপদ্বীপে ৩৫ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।
শনিবার বিকেলে কিউবার সরকার গ্রানমা, সান্তিয়াগো দে কিউবা, গুয়ান্তানামো এবং হলগুইন প্রদেশের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করে।
এদিকে, অনিয়মিত এবং ধীর গতিতে চলা ঝড়ে হাইতিতে কমপক্ষে তিন জন এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে চতুর্থ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস বলেছেন, ‘আমি জ্যামাইকানদের এই আবহাওয়ার হুমকিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। নিজেদের রক্ষা করার জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, জ্যামাইকার প্রস্তুতি আজই সম্পন্ন করা উচিত। জ্যামাইকায় ৬৫০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র সক্রিয় করা হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বীপজুড়ে গুদামগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে দ্রুত বিতরণের জন্য হাজার হাজার খাদ্য প্যাকেজ প্রস্তুত করা হয়েছে।
হাইতিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে তিন জন মারা গেছেন এবং একটি দেয়াল ধসে আরও পাঁচ জন আহত হয়েছেন। উত্তর-পূর্বে সেন্ট-সুজানে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি, বন্যা এবং নদীর তীর ভেঙে যাওয়ার কারণে একটি সেতু ধ্বংস হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
ঝড়টি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের প্রায় ২০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। এর ফলে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ এবং ট্র্যাফিক লাইটও ভেঙে পড়েছে, কয়েকটি ছোট ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বন্যার জলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।