
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা মিশরের রাজধানী কায়রোতে দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বৈঠকটি মিশর সরকারের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে এবং প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আস-সিসির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে নেতারা গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, অবরোধ তুলে নেওয়া এবং পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ফিলিস্তিনের জাতীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক প্রকল্প সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি জাতীয় সংলাপ আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
একই সঙ্গে সংগঠনগুলো গাজা, পশ্চিম তীর ও বায়তুল মুকাদ্দাসে যে কোনো ধরনের দখল, সংযুক্তি পরিকল্পনা বা জোরপূর্বক স্থানান্তর পরিকল্পনার কঠোর নিন্দা জানায়।
বৈঠকে ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আন-নাখালা বলেছেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় থাকবে কেবল তখনই, যখন দুই পক্ষ—ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে। ইসরায়েল যদি চুক্তি ভঙ্গ না করে, আমরাও যুদ্ধবিরতিতে অটল থাকব।’
হামাসের মুখপাত্র হাযেম কাসেম বলেছেন, ‘আমরা মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টায় অর্জিত যুদ্ধবিরতির প্রতিটি ধাপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দখলদার ইসরায়েলকে আহ্বান জানাই, তারা যেন তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। বিশেষ করে বিমান হামলা বন্ধ, অবরোধ প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশের বিষয়টি যেন নিশ্চিত করা হয়।’
তিনি আরও জানান, হামাস একটি সর্বজনীন ফিলিস্তিনি ঐক্যমত্য অর্জনে আগ্রহী, যা যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার শাসন কাঠামো নির্ধারণের পাশাপাশি অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানে ভূমিকা রাখবে।
ইসরায়েলের কাছে পুনর্গঠনের খরচ দাবি
বৈঠক শেষে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মুসা আবু মারযুক বলেন, গাজার ধ্বংসযজ্ঞের দায় দখলদার ইসরায়েলের। তাই তাদেরই এই পুনর্গঠনের পূর্ণ খরচ বহন করতে হবে।
তিনি রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন শুধু জরুরি নয়, বরং এটি বিশ লাখেরও বেশি মানুষের অধিকার – যারা তাদের ঘর, আশ্রয় এবং জীবিকা হারিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবেও গাজা পুনর্গঠনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ধ্বংসের দায় ইসরায়েলের, তাই পুনর্গঠনের ব্যয় তাদেরই বহন করতে হবে।’
ইয়েমেনের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী আল-হুথি বলেছেন, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতি কতটা মানছে, তা ইয়েমেন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আমাদের বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে আছে, যাতে ইসরায়েলের যেকোনো উসকানি বা রেড লাইন অতিক্রমের জবাব দেওয়া যায়।’