
ওয়ানডে সিরিজে বড় ব্যবধানে হারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি। বরং চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিতব্য তিন ম্যাচের ২০ ওভারের সিরিজকে সামনে রেখে তিনি বাংলাদেশকে আগাম হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন।
মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্যামি বলেছেন, ‘গেল বছরের ডিসেম্বরে আমরা ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলাম, তারা (বাংলাদেশ) জিতেছিল টি-টোয়েন্টিতে ৩-০ ব্যবধানে। আশা করি, এবার সেই ইতিহাস উলটে দিতে পারবো।’
স্যামি বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার দলের পারফরম্যান্সে আমি চরম হতাশ। বাংলাদেশ তাদের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। তারা এই সিরিজে যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে।’ উইকেট নিয়ে কোনো অভিযোগ না করে বরং স্যামি স্বীকার করেছেন, ‘সব দলই ঘরোয়া সুবিধা নেয়, বাংলাদেশও নিয়েছে-এতে কোনো দোষ দেখি না।’
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার চট্টগ্রামে নিজেদের ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ হিসেবে দেখছে। কোচ স্যামি জানিয়েছেন, তার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের সেরা উইকেট চট্টগ্রামেই। এখনো উইকেট না দেখলেও সেখানে অনুশীলন করে ম্যাচের আগে পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার পরিকল্পনা তার। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, মিরপুরের ধীর উইকেটের তুলনায় চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক পিচে দলটি ভালো খেলবে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজকে সামনে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে কিছু পরিবর্তন এনেছে। বাঁহাতি স্পিনার খারি পিয়েরে যোগ দিয়েছেন স্কোয়াডে, যার ফলে এখন দলে তিন জন বাঁহাতি স্পিনার-আকিল হোসেন, গুডাকেশ মোতি ও পিয়েরে। তবে চোটের কারণে দুই পেসার শামার জোসেফ ও জেডিয়াহ ব্লেডস ছিটকে গেছেন, ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড থাকছে ১৪ জনের।
ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের স্পিনের বিপক্ষে ভুগেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে জয় পেলেও বাকি দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরেছে ক্যারিবিয়ানরা। তিন ম্যাচে দুই দল মিলে ৫৪ উইকেট পড়া সিরিজটিতে স্পিনাররাই ছিলেন নিয়ন্ত্রণে। এবার তাই স্পিন আক্রমণ আরও শক্ত করে নামছে স্যামির দল।
বাংলাদেশ ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। স্যামিও একই সুরে বলেছেন, ‘আমি সব সময়ই হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার পক্ষেই। তবে আমাদের লক্ষ্য হলো এমন দল গড়া, যারা দেশের বাইরে যেকোনো কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে পারবে।’
ওয়ানডে সিরিজ শেষের পর ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে দুই দল। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৭, ২৯ ও ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। স্যামির সতর্কবার্তার পর এখন দেখার বিষয়, নিজেদের ফর্ম ও আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে বাংলাদেশ আবারও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করতে পারে কিনা। মিরাজের মতো লিটন কুমার দাসও হয়তো সেটি করতে চাইবেন।