
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা সকল ফিলিস্তিনি দলের সঙ্গে একটি জাতীয় সংলাপে প্রবেশ করছে। গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ এবং অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য মিশরের মধ্যস্থতায় কায়রোতে হামাস-ফাতাহ বৈঠকের সময় বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এই ঘোষণাটি এসেছে।
তুর্কিভিত্তিক আনাদোলু এজেন্সির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, তাদের দল ‘খোলা হৃদয়ে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য জাতীয় শক্তির প্রতি হাত বাড়িয়ে জাতীয় সংলাপে এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।’
কাসেম ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ‘গাজায় বিদ্যমান জাতীয় ঐকমত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে এবং খোলা মনে সংলাপে আসার’ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এখন জাতীয় ঐক্যের এবং সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সময়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমান সময় কেবল হামাসের জন্যই নয়, গাজা এবং পশ্চিম তীরের সমগ্র ফিলিস্তিনি জনগণের জন্যও বিপজ্জনক।
হামাসের মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘সকল বিবরণ’ বাস্তবায়নের প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে তিনি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
কাসেম বলেন, হামাস ‘চুক্তিটি সম্পন্ন করার জন্য দিনরাত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং যা সম্মত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
তার মতে, হামাস তুরস্ক, মিশর এবং কাতারের কাছ থেকে স্পষ্ট নিশ্চয়তা পেয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সরাসরি আশ্বাসও পেয়েছে যে, যুদ্ধ কার্যকরভাবে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হামাস জীবিত বন্দী এবং কিছু দেহাবশেষ হস্তান্তরের মাধ্যমে চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছে এবং বাকিদের হস্তান্তরের জন্য কাজ করছে।
দ্বিতীয় ধাপ সম্পর্কে কাসেম বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আরও আলোচনা এবং স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন। এই পর্যায়ে বিস্তৃত বিষয় এবং জটিল বিষয়গুলো জড়িত – যার জন্য বিস্তারিত কর্মপদ্ধতির প্রয়োজন।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, হামাসের মূল লক্ষ্য গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সম্পূর্ণ এবং স্থায়ী অবসানে পৌঁছানো।
কাসেম আরও বলেন, তারা ইসরায়েলি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীদের অবহিত করে চলেছে। তিনি বলেন, এখনো রাফাহ ক্রসিং বন্ধ করে রেখেছে, যার ফলে পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছাতে পারছে না।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের ২০-দফা গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ ১০ অক্টোবর সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।