
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে টানা পতন অব্যাহত রয়েছে। ২০২০ সালের পর মঙ্গলবার দেখা গেছে সবচেয়ে বড় দরপতন। বুধবারও এ ধারা বজায় থেকেছে। শুরুতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেওয়া এবং মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থানের কারণে নতুন করে বিক্রির চাপ তৈরি হয়। ফলে আবারও দাম নেমে যায়।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৪ হাজার ১৭ দশমিক ২৯ ডলারে। আগের দিনের তুলনায় এটি ২ দশমিক ৬ শতাংশ কম, যা প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে দিনের শুরুতে স্বর্ণের দাম উঠেছিল ৪ হাজার ১৬১ দশমিক ১৭ ডলার পর্যন্ত। অন্যদিকে ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য নির্ধারিত ইউএস গোল্ড ফিউচার্সের দামও কমেছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩২ দশমিক ৮০ ডলারে।
ডলারের বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় স্বর্ণের দাম আরও চাপে পড়েছে। আজ মার্কিন ডলার সূচক বেড়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায়। সূচকটি ০ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণের ক্রয়মূল্য তুলনামূলক ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
এর আগের সেশনে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার তা এক লাফে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যায়। যা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় পতন।
বিশ্লেষকদের মতে, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মার্কিন সুদের হার হ্রাসের প্রত্যাশা এবং বিনিয়োগ তহবিলের (ইটিএফ) শক্তিশালী প্রবাহের কারণে এ বছরও স্বর্ণের দাম এখন পর্যন্ত ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে সাম্প্রতিক এই দরপতন বাজারে নতুন দিক নির্দেশ করছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রতিবেদনের জন্য, যা প্রকাশ পাবে আগামী শুক্রবার। এই প্রতিবেদন থেকেই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ সুদের হার নীতির দিকনির্দেশনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়াও অন্য ধাতুগুলোর মধ্যেও দামের পতন দেখা গেছে। স্পট সিলভারের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৪৭ দশমিক ৮৪ ডলারে। মঙ্গলবার এটি আরও বড় ধাক্কা খেয়ে ৭ দশমিক ১ শতাংশ কমেছিল। প্লাটিনামের দাম কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, বর্তমানে এর মূল্য এক হাজার ৫৩০ দশমিক ৩৫ ডলার। প্যালাডিয়ামের দামও নেমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ, এখন প্রতি আউন্সে এক হাজার ৩৯১ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।