
রাজধানীর সোবহানবাগে এক নারী সাংবাদিকের আত্মহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ২৪৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। যৌন হয়রানির অভিযোগের পর ওই সাংবাদিকের মৃত্যুকে নারী কর্মীদের জন্য ভয়াবহ কর্মপরিবেশের প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করে তাঁরা সুষ্ঠু তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোবহানবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে ‘ঢাকা স্ট্রিম’ অনলাইন পোর্টালের গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত এক নারী সাংবাদিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার সহকর্মীরা জানান, মৃত্যুর আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটির বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
ওই ঘটনায় মোট ২৬ জন গণমাধ্যমকর্মী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন, যাদের মধ্যে ৯ জন নারী সাংবাদিক রয়েছেন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, ‘এ ঘটনা আমাদের দেশের নারী কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশের সংকট ও বাস্তবতাকে আরও নগ্নভাবে প্রকাশ করেছে।’ বিবৃতিটি পাঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা ও কবি ও সাংবাদিক গিরীশ গৈরিক।
এতে উল্লেখ করা হয়: লিখিত ও প্রমাণসাপেক্ষ অভিযোগের পরও ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ অভিযুক্তকে বরখাস্ত করেননি। অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত আলতাফ শাহনেওয়াজকে বহাল রাখা হয়, যা প্রতিষ্ঠানটির নৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা। ৮টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল, যা “নারীর প্রতি চরম অবমাননার শামিল।”
বিবৃতিতে ২৪৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক নিম্নলিখিত দাবি জানান:
- সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা
- অভিযুক্ত আলতাফ শাহনেওয়াজ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা
- ঢাকা স্ট্রিম কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ভূমিকা তদন্তের আওতায় আনা
- প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা
স্বাক্ষরকারী বিশিষ্টজনদের মধ্যে রয়েছেন: মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না, অর্থনীতিবিদ আব্দুল বায়েস, কবি নির্মলেন্দু গুণ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ,অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, গবেষক কামরুল হাসান মামুন, কবি গুলতেকিন খান, লেখক কাসফিয়া নাহরিন, নৃবিজ্ঞানী মাহমুদুল সুমন এবং আরও অনেক বিশিষ্টজন।