
টুইটারের (বর্তমানে এক্স) সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ব্লক-এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) জ্যাক ডরসি কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান থমাস ম্যাসিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চেয়েছেন, যা এই বিলিয়নিয়ারের ক্রমবর্ধমান ‘অ্যান্টি-এস্টাবলিশমেন্ট’ বা প্রথাবিরোধী রাজনীতির প্রতি ঝোঁক প্রকাশ করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে জ্যাক ডরসি এক্স-এ ছয় শব্দের একটি বার্তা পোস্ট করেন, ‘প্রেসিডেন্ট পদের জন্য থমাস ম্যাসিকে সমর্থন করি।’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পোস্টটি মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ পায় এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে লিবারটারিয়ান, ট্রাম্প সমর্থক এবং প্রগতিশীলদের বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ম্যাসিকে প্রেসিডেন্ট পদে ডরসির সমর্থন করার পোস্টটি ৩০ লাখেরও বেশি ভিউ পেয়েছে।
স্বতন্ত্র অবস্থান এবং দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ঘন ঘন বিরোধিতার জন্য পরিচিত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ম্যাসি এই সমর্থন দ্রুতই নজরে আনেন এবং ডরসির সমর্থনের প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবো বলে মনে হয় না, তবে সমর্থনের জন্য জ্যাককে ধন্যবাদ।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘তবে খুশি হব যদি আমরা কংগ্রেসে আরও চার-পাঁচজন পাই, যারা কেবল তাদের দল যা বলে তা-ই সবসময় করে না।’
সিলিকন ভ্যালির বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা এবং কেনটাকির প্রকৌশলী-রাজনীতিকের এই অপ্রত্যাশিত জোটের সংক্ষিপ্ত কথোপকথনটি মুহূর্তেই দিনের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর একটিতে পরিণত হয়। ৫৪ বছর বয়সী ম্যাসি কেনটাকির চতুর্থ কংগ্রেশনাল জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তিনি ওয়াশিংটনের সবচেয়ে স্বতন্ত্রচেতা রাজনীতিকদের একজন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
তিনি প্রায়শই বড় ব্যয় পরিকল্পনা ও দ্বিদলীয় বিলের বিপক্ষে ভোট দেন, যা তার মতে সংবিধানবিরোধী বা আর্থিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন। নিজ দল, এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও মতবিরোধে জড়িয়েছেন তিনি।
ম্যাসিকে সমর্থন জানানো ৪৮ বছর বয়সী ডরসিও প্রযুক্তি জগতে একই ধরনের স্বতন্ত্রতার পথ অনুসরণ করেছেন। ২০০৬ সালে টুইটার সহপ্রতিষ্ঠা করার পর ২০২১ সালে সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং তারপর থেকে সরকার এবং কর্পোরেট দুই ক্ষেত্রেই বিকেন্দ্রীকরণ, বাকস্বাধীনতার অধিকার এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বারবার কথা বলেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে বেশ কিছু প্রথাবিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন করেছেন ডরসি, যাদের মধ্যে রয়েছেন—ডেমোক্র্যাট থেকে স্বতন্ত্র পরিচয় বেছে নেওয়া রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র; সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী অ্যান্ড্রু ইয়াং এবং বর্তমান জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড। রিপাবলিকান ম্যাসিকে সমর্থন ডরসির লিবারটারিয়ান ও স্বতন্ত্রচিন্তার দিকে ঝুঁকে পড়াকেই প্রকাশ্যে এনেছে।
ডরসি বারবারই কেন্দ্রীয় ক্ষমতা কাঠামোর বিপক্ষে কথা বলেছেন এবং বিকেন্দ্রীভূত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রকল্প ব্লুস্কাই-এও বড় অঙ্কের অর্থায়ন করেছেন, যা তিনি ‘ব্যবহারকারীদের কাছে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়ার’ উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সূত্র: রয়টার্স