
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বইটি প্রকাশিত হবে। তার আগেই বইটির পূর্ণাঙ্গ কপি পেয়েছে বিবিসি। সেই বইয়ে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান অভিযোগকারী হিসেবে জিউফ্রে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তিনবার যৌন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। তার দাবি, একবার যৌন সম্পর্কের সময় এপস্টেইন ছাড়াও আরও আটজন তরুণী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্স অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও, ২০২২ সালে জিউফ্রের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
বিবিসি জানায়, স্মৃতিকথায় ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের হাতে তরুণীদের প্রতি চলা যৌন নিপীড়নের এক জটিল চিত্র ফুটে উঠেছে। এপস্টেইন ও তার সহযোগী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এই নিপীড়নের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। ২০১৯ সালে কারাগারে মারা যান এপস্টেইন, আর ম্যাক্সওয়েল যৌন পাচারের দায়ে ২০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
জিউফ্রে বইতে উল্লেখ করেছেন, বছর কয়েক পরও এপস্টেইন ও ম্যাক্সওয়েলের কাছ থেকে কতটা ভীত ছিলেন তিনি। বইতে তিনি এপস্টেইনের হাতে চালানো নৃশংস যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। তার কথায়, এপস্টেইনের অত্যাচারে তিনি এত যন্ত্রণা পেয়েছিলেন যে অচেতন হয়ে পড়ার প্রার্থনা করতেন।
বাকিংহাম প্যালেসের এক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, বই প্রকাশের কারণে এপস্টেইনের ঘনিষ্ঠজন ও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ওপর চাপ বাড়তে পারে। সম্প্রতি প্রিন্স অ্যান্ড্রু রাজকীয় পদবিগুলো ব্যবহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জিউফ্রে ও লেখক অ্যামি ওয়ালেস মিলে লেখা এই বইয়ে ২০০১ সালে জিউফ্রের প্রথমবার প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সাক্ষাতের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। ম্যাক্সওয়েল তাকে ‘সিন্ডারেলা’র মতো এক সুন্দর রাজপুত্রের দেখা দিতে নিয়ে যান। ওই রাতে লন্ডনের ট্রাম্প নাইট ক্লাবে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সময় কাটানোর কথা এবং পরবর্তী যৌন সম্পর্কের বিষয়ও স্মৃতিকথায় উল্লেখ আছে।
জিউফ্রে দাবি করেছেন, প্রিন্স অ্যান্ড্রু তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ককে নিজের জন্মগত অধিকার মনে করতেন। জিউফ্রে আরও জানান, নিউইয়র্কের এপস্টেইনের টাউনহাউস এবং এপস্টেইনের মালিকানাধীন দ্বীপে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তাদের যৌন সম্পর্ক হয়েছিল।
বইটির শেষে ২০২২ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
জিউফ্রে ও এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাড়াও বইয়ে নারীদের শিশুদের মতো দেখতে বাধ্য করা, শারীরিক নির্যাতন, মারধর ও শ্বাসরোধের ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করতাম, হয়তো আমি একজন যৌনদাসী হিসেবে মরব’।
২০০৮ সালে ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের কম বয়সী এক কিশোরীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টা করার দায়ে এপস্টেইন দোষী সাব্যস্ত হন। বিচার চলাকালীন ২০১৯ সালে তিনি কারাগারে মারা যান।