
হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচ খেলে হামজা চৌধুরী, সামিত সোম, ফাহমিদুল ইসলামরা হংকং বিমানবন্দর থেকে ভিন্ন ভিন্ন ফ্লাইটে নিজ দেশে চলে গেছেন। তারা ঢাকায় ফেরেননি। লন্ডনে হামজা, কানাডায় সামিত, ইতালিতে ফাহমিদুল। ঢাকায় ফিরলে উলটো পথ, তাই হংকং থেকে চলে গেছেন তারা। ফুটবল দলের সঙ্গে ঢাকায় ফিরেছেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় জায়ান আহমেদ।
গুঞ্জন ছিল জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলে আসা ডিফেন্ডার জায়ান ঢাকায় ক্লাব ফুটবলে খেলবেন। বসুন্ধরা কিংসের জার্সি গায়ে দেখা যাবে এমনটি শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু জায়ান কোথাও খেলছেন না। তিনি আজ যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন। তার বাবা শরিফ আহমেদ জানিয়েছেন জায়ান আগামীকাল (আজ) যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এক সঙ্গে চলে যাচ্ছি। আগেই চলে যেতাম। পারিবারিক অনুষ্ঠান রয়েছে। থাকতেই হবে। তাই ঢাকায় ফিরেছিল জায়ান।’

জায়ান বসুন্ধরা কিংসে খেলবেন এমন কিছু শোনা গিয়েছিল। মোহামেডান জায়ানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিল। সেটি নাকি পছন্দ হয়নি জায়ানের বাবার। এ প্রসঙ্গে জায়ানের বাবা শরিফ আহমেদ বলেন, ‘না না। মোহামেডানের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। এমনি অন্যভাবে দুই একটু কথা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো কনক্রিট কোনো কথা না। জায়ানকে মোহামেডানে খেলার কোনো আমন্ত্রণ পাইনি আমরা।’
বসুন্ধরা কিংসে খেলার বিষয়টিও না করে দিয়ে শরিফ আহমেদ বলেন, ‘না বসুন্ধরা কিংসেও খেলবে না জায়ান।’ শোনা গেছে জায়ানকে পেতে মোহামেডান মাসে ১ লাখ টাকা বেতন অফার করেছিল। কথাটি উড়িয়ে দেন শরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে নকিবের কথা হয়েছে। কিন্তু এরকম কিছু না।’
জায়ানের বাবা জানিয়েছেন জায়ান এখন পুরোপুরি পড়াশুনায় ব্যস্ত থাকবে। ‘ওর আর এক বছর পড়াশুনা রয়েছে। সেগুলো কমপ্লিট করতে হবে। আগে পড়াশুনা, পরে খেলা। ক্লাব লিগে খেলতে হলে ঢাকায় অবস্থান করতে হবে। জায়ান যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করছে। ক্লাব ফুটবলে খেললে যুক্তরাষ্ট্রের পড়াশুনা হবে না। এটা ক্যারিয়ারের ব্যাপার।’

এশিয়ান কাপ ফুটবলে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক বিদায় হয়ে গেছে। তার পরও সি গ্রুপে দুই ম্যাচ রয়ে গেছে। আগামী ১৮ নভেম্বর নিজেদের ঘরের মাঠে বাংলাদেশ খেলবে ভারতের বিপক্ষে, ওটাই দেশের মাটিতে শেষ ম্যাচ। ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে, খেলা হবে সিঙ্গাপুরের মাঠে। জায়ান বাংলাদেশে আসবেন কিনা সেই প্রশ্নে জায়ানের বাবা শরিফ আহমেদ জানিয়েছেন এটা নির্ভর করছে যারা দল সিলেকশন করবেন তাদের ওপর। বাফুফে যদি জায়ানকে ডাকে তাহলে জায়ান আবার ঢাকায় ফিরবেন। যেহেতু ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ আছে। জায়ানকে ডাকলে জায়ান আসবে।’
ঢাকায় হোম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে জায়ান ৭৮ মিনিটে তাজ উদ্দিনের পরিবর্তে খেলতে নেমেছিলেন। ভালো খেলেছিলেন জায়ান। বাংলাদেশের আক্রমণে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। যে কারণে হংকংয়ের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে জায়ান একাদশে সুযোগ পান। তবে ১-১ গোলে ড্র হওয়া ফিরতি ম্যাচে ৬৫ মিনিটে জায়ানকে বসিয়ে দেন কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। উইংব্যাক পজিশনে জায়ান আস্থা রাখতে পেরেছেন।
ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন জায়ান ভালোই করেছে। তাকে আরও দেখার ব্যাপার আছে। জায়ানের ব্যাপারে সবাই পজিটিভ কথা বলেছেন। মূল জাতীয় দলে ঢোকার আগে জায়ান খেলেছেন কোচ সাইফুল বারী টিটুর অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলে। ওখানেই নিজেকে ঝালিয়ে নিয়ে কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার সিনিয়র দলে জায়গা পান জায়ান আহমেদ।