
আজ বাদে কাল পুনরায় শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ তথা বাংলাদেশ ফুটবল লিগ। এমন সময় বসুন্ধরা কিংসের ঘরে দুঃসংবাদ। দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তারিক কাজী খেলবেন না কিংসে। না খেলার জন্য চুক্তি বাতিল করে তার ফেসবুকে জানিয়ে দিয়েছেন।
তারিক তার ক্লাব থেকে বেতন পান না। পারিশ্রমিক না পেলে তিনি আর খেলবেন না বলে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি বাতিল করার কথা ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে ক্লাবের ম্যানেজার ওয়াসিমুজ্জামানকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসানকে ফোন দেওয়া হলে তিনিও ফোন ধরেননি।

ইত্তেফাকের ফোন ধরেছিলেন তারিক। অন্য বিষয় নিয়ে কথা বললেও তারিক কিংসের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার কথা কিছু বলেননি। বলেছেন, ‘আমি কোনো কথা বলবো না। এখন কোনো কথা বলব না।’ কিংসের অন্য সূত্রে জানা গেছে, তারিক গত বছরের বকেয়াও পাননি। এর আগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রবসন পারিশ্রমিক না পেয়ে অভিযোগ করেছিলেন, কোচ ভ্যালেরি তিতে অভিযোগ করেন ফিফার কাছে। বকেয়া পারিশ্রমিকের সূত্র ধরে একাধিক উঠেছে।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাত্রই হংকংয়ের বিপক্ষে খেলে ঢাকায় ফিরে ছিলেন তারিক কাজী। এসেই বোমা ফাটালেন। গতকাল তারিক কাজী তার ফেসবুকে সরাসরি লিখেছেন, ‘বকেয়া বেতনের কারণে আজ (গতকাল) বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলাম।’ তারিক কাজী বেতনের জন্য বহুবার কথা বলেছেন ক্লাবের সঙ্গে। কিন্তু ক্লাব টাকা দিচ্ছিল না। তারিকও নীরবে খেলে যাচ্ছিলেন।

কথাগুলো সেভাবেই তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একজন ফুটবলার সব সময় এতটা নীরবে সবকিছু সয়ে যেতে পারে না। নীরবতা বহন করা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মিত পারিশ্রমিক না দেওয়া, দেরিতে দেওয়া, অনিশ্চয়তায় রাখা। এগুলো আমাকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছিল। আমি ভালো ছিলাম না। এটা শুধু টাকা-পয়সার ব্যাপার না। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার কারণেই আমি প্রতিদিন মাঠে নিজের সেরাটা দিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ভালোবাসা, আবেগ নিয়ে আমাকে মাঠে লড়াই করতে হয়। আমাকে আমার ফুটবল ভালোবাসার সঙ্গে আপস করতে গিয়ে নীরবে যুদ্ধ করতে হয়, আমার প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। এভাবে কতোক্ষণ আপনি ঠিক থাকতে পারবেন। তার পরও ফুটবলের প্রতি অগাধ ভালোবাসার কারণে। আপস করেছি।’
তারেক নিজের পোস্টে আরও জানান, তার মতো অনেক ফুটবলারও এই অবিচারের শিকার। তিনি লিখেন, ‘আমি খুব ভালো করেই জানি, দেশে এমন অনেক খেলোয়াড় আছেন, যারা আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, পেশাদার খেলোয়াড় যারা, এখনো নীরবে কষ্ট পাচ্ছেন, কারণ কিছু ক্লাব নিয়মিতভাবে খেলোয়াড়দের প্রাপ্য বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। তাদের সংগ্রামগুলো হয় তো শোনা যায় না। কিন্তু তাদের অবদানেই এই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখে।’
ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক রায়হান কাজী ২০২০ সালে বসুন্ধরা কিংসে লিগে খেলতে শুরু করেন। আর কোনো ক্লাবে খেলেননি তিনি। এরপর নিয়মিত জাতীয় দলে খেলে আসছেন। কখনো তার মুখে অভিযোগ শোনা যায়নি। এবারের কথায় মনে হচ্ছে নিজ দেশে ফিরে যাবেন।