
বাংলাদেশে ফিরেছেন পরিচিত এক মুখ-ড্যারেন স্যামি। একসময় বিপিএলে রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক হিসেবে, আবার কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নেতৃত্ব দিয়ে বা প্রতিপক্ষ হয়ে, তিনি ঢাকার, চট্টগ্রামের উইকেটগুলো বেশ চেনেন। তবে এবার ভিন্ন ভূমিকায় এসেছেন এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি-এখন তিনি ওয়েস্টইন্ডিজ দলের প্রধান কোচ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ সামনে রেখে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে স্যামি জানালেন, তিনি কতটা রোমাঞ্চিত এই সফর নিয়ে এবং কীভাবে দেখছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলোকে।
‘আমি খুশি যে, ব্যক্তিগতভাবে আমার এখানে কিছু দারুণ স্মৃতি রয়েছে। তবে এবার আমি অন্য ভূমিকায়। আশা করি, এখানে খেলার অভিজ্ঞতা এবং দলের ড্রেসিংরুমে থাকা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের জ্ঞান আমাদের কাজে লাগবে। এখন আমাদের শুধ মাঠে নেমে খেলতে হবে’- এমনটাই বলেছেন ক্যারিবিয়ান এই তারকা। স্যামি আরো যোগ করেছেন, ‘আমরা ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের জন্য সরাসরি যোগ্যতা অর্জনের পথে আছি। তাই এই সিরিজটা আমাদের কাছে কেবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, পয়েন্ট অর্জনেরও সুযোগ। শেষ বার আমরা বাংলাদেশকে নিজেদের মাঠে হারিয়েছিলাম। কিন্তু এবার তাদের ঘরের কন্ডিশনে খেলতে হবে, যেখানে তারা সবসময়ই শক্তিশালী। জিততে হলে আমাদের সত্যিই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।’
সম্প্রতি ঘরোয়া ক্রিকেটে ফলাফলের অবনতি ঘটায় ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ড বড় ধরনের সংস্কার শুরু করেছে। অনেকের প্রশ্ন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ’ নামের সেই ঐতিহাসিক ব্র্যান্ডটি কী-তবে ব্যর্থ হচ্ছে? প্রশ্নের জবাবে স্যামি দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের ধারণাটি কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। এটা ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ও ঐতিহ্যবাহী ব্র্যান্ডগুলোর একটি। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং অনুপ্রেরণার জায়গা এত গভীর যে এটা কখনো স্নান হতে পারে না।’
তিনি স্মৃতিচারণ করেন সেই সোনালি যুগের, যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নামই ছিল প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের সমান। ‘যখন আমরা আধিপত্য বিস্তার করতাম, তখন সবাই চাইত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলতে। এখন আমরা পরিবর্তনের পথে আছি, কিন্তু ধারণাটি কখনো ব্যর্থ নয়। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ব্র্যান্ডটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। হ্যাঁ, চ্যালেঞ্জ আছে আর্থিক, কাঠামোগত কিংবা ক্রিকেটিং বাস্তবতায়। কিন্তু আমাদের ইতিহাস আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। আমি বিশ্বাস করি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট এখনো বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, এমনকি বাংলাদেশেও।’
মিরপুরের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই স্যামির কণ্ঠে ফুটে ওঠে বাস্তবতা ও আত্মবিশ্বাস দুটোই। ‘আমি পিচটা দেখেছি, কিন্তু এমন উইকেট আমরা আগে খুব একটা দেখিনি। তবে আমরা জানি, উপমহাদেশের কন্ডিশন সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ব্যাটারদের জন্য। আমাদের অনেক খেলোয়াড় ভারত থেকে এসেছে, যারা এমন ধরনের উইকেটে খেলেছে, তাই সেটা একটা বাড়তি সুবিধা। তবে দিনের শেষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে-কত দ্রুত কন্ডিশন বোঝা যায় এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োগ করা যায়।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ হারের প্রসঙ্গ উঠতেই স্যামি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তাদের ঘরের কন্ডিশনে সবসময়ই শক্তিশালী দল। তারা জানে এখানে কীভাবে খেলতে হয়। তাই আমরা কখনোই তাদের হালকাভাবে নিচ্ছি না। তাদের হারাতে হলে আমাদের অসাধারণ ক্রিকেট খেলতে হবে।’ নিজের দলের প্রস্তুতি নিয়ে স্যামি বলেছেন, ‘যারা ভারতে টেস্ট খেলেনি, তারা সবাই চেন্নাইয়ে একাডেমিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। কিশন কার্টি, আকিম জর্ডান, শামার জোসেফ, গুদাকেশ মোতি, অ্যালিক আথানেজ-তারা সবাই সেখানে পরিশ্রম করেছে। আমি সন্তুষ্ট তাদের প্রস্তুতি নিয়ে।’