
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু তার সব রাজকীয় উপাধি, এমনকি ডিউক অব ইয়র্ক উপাধিটিও ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। নতুন করে জেফ্রি এপস্টিন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো এবং রাজপ্রাসাদের কর্মকর্তাদের তীব্র চাপের পর এ সিদ্ধান্ত আসছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, রাজা চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে এক বৈঠকের পর অ্যান্ড্রু এই সিদ্ধান্ত নেন। তার সাবেক স্ত্রী সারা, ডাচেস অব ইয়র্ক–ও নিজের উপাধি ত্যাগ করে ‘সারা ফার্গুসন’ নামে পরিচিত হবেন বলে জানা গেছে।
অ্যান্ড্রু রাজপরিবারে জন্ম নেওয়ায় প্রিন্স উপাধিটি রাখবেন, তবে তিনি আর অর্ডার অব দ্য গার্টার–এর সদস্য থাকবেন না। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড থেকে তিনি কার্যত সম্পূর্ণভাবে বাদ পড়ছেন।
এর আগেই ২০২২ সালে প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ অ্যান্ড্রুর সামরিক পদবিগুলো বাতিল করেছিলেন। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়া জিউফ্রের করা যৌন নির্যাতনের দেওয়ানি মামলার মুখোমুখি ছিলেন, যা পরবর্তীতে বহু মিলিয়ন পাউন্ডে মীমাংসা করা হয়।
সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারি শুরু হয় যখন দ্য সান অন সানডে প্রকাশ করে, ২০১১ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি অ্যান্ড্রু এপস্টিনকে এক ইমেইলে লিখেছিলেন— “আমরা একসঙ্গেই আছি।” এই বার্তাটি পাঠানো হয়েছিল ঠিক এক দিন পর, যখন তার সঙ্গে ভার্জিনিয়া জিউফ্রের তোলা বিতর্কিত ছবি প্রকাশ পায়। অথচ ২০১৯ সালে বিবিসি নিউজনাইট সাক্ষাৎকারে অ্যান্ড্রু দাবি করেছিলেন, তিনি তিন মাস আগেই এপস্টিনের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
অ্যান্ড্রু বরাবরই জিউফ্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তবে জিউফ্রের মৃত্যুর পর প্রকাশিতব্য আত্মজীবনী “নোবডিস গার্ল”–এ তিনি আবারও দাবি করেছেন, ১৭ বছর বয়সে তাকে তিনবার প্রিন্স অ্যান্ড্রুর কাছে পাচার করা হয়েছিল। বইটিতে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, পরদিন সকালে ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল তাকে প্রশংসা করে বলেছিলেন, “তুমি ভালো করেছ, প্রিন্স মজা পেয়েছে।”
অ্যান্ড্রুর বিতর্ক এখানেই শেষ নয়। এ বছরের শুরুর দিকে তার বিরুদ্ধে চীনা গুপ্তচরবৃত্তি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগও ওঠে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, তিনি চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন এবং ব্রিটিশ নিরাপত্তা স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ব্যক্তিগত লাভের চেষ্টা করেছিলেন।
একজন রাজপ্রাসাদ সূত্র দ্য সান–কে বলেন, “রাজা চার্লস ও রাজপ্রাসাদ এখন ক্লান্ত ও হতাশ। অ্যান্ড্রুর বিতর্কে এবার চূড়ান্ত রেখা টানা দরকার।”