
বিশ্বখ্যাত মার্কিন ফার্মাসিউটিকাল প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসন যুক্তরাজ্যে বড় ধরনের আইনি জটিলতায় পড়েছে। জনপ্রিয় এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে এমন উপকরণ দিয়ে তারা বেবি পাউডার তৈরি ও বাজারজাত করছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, তিন হাজার মানুষ ইতোমধ্যে ‘অ্যাসবেসটস’ সমৃদ্ধ বেবি পাউডার বিক্রির অভিযোগ তুলে জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন।
মামলায় অভিযোগ, ৬০ এর দশক থেকেই জনসন অ্যান্ড জনসনের (জে অ্যান্ড জে নামেও পরিচিত) ট্যালকম পাউডারে কিছু ক্ষতিকর উপকরণ যুক্ত করা হচ্ছে। এসব উপকরণের মধ্যে আছে ট্রেমোলাইট ও অ্যাক্টিনোলাইট।
এই দুই খনিজ পদার্থকে অ্যাসবেসটস হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়, যা ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এই উপকরণ ব্যবহারে সত্ত্বেও পণ্যের মোড়কে এ ব্যাপারে কোনো সতর্কতা দেওয়া হয়নি।
১৯৩০ সালে ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে অ্যাসবেসটসের যোগসূত্র সম্পর্কে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের অনেকে হয় ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার ও মেসোথেলিওমা ক্যান্সারে ভুগছেন বা মারা গেছেন। যাদের সবাই দাবি করেছে, তারা দীর্ঘ সময় ধরে জে অ্যান্ড জে-এর বেবি পাউডার ব্যবহার করেছেন।
আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়, এগুলো ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরও জে অ্যান্ড জে বেবি পাউডারের মোড়কে এ বিষয়ে কোনো সতর্কবাণী যুক্ত করেনি। বরং পাউডারটির ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বরাবরই একে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পণ্য হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের বেবি পাউডার ‘সব ধরনের প্রয়োজনীয় মানদণ্ড মেনে চলে। এতে কোনো ধরনের অ্যাসবেসটস নেই এবং এর ব্যবহারে ক্যানসারে আক্রান্তের কোনো ঝুঁকি নেই।’
তবে ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে ট্যাল্ক বা ট্যালকম যুক্ত বেবি পাউডারের বিক্রি বন্ধ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি মামলা দায়েরের নজির আছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপিলে জনসন অ্যান্ড জনসন জয়ী হলেও বেশ কয়েকটি মামলায় হেরে ভোক্তাদের লাখো কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আইনজীবীদের মত, এসব মামলার নিষ্পত্তিতে হাজারো মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা গুণতে হতে পারে জনসন অ্যান্ড জনসনকে।