
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি (রব), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্র জানায়, সনদে দলগুলোর সই দেওয়া এবং প্রয়োজনে বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এই বৈঠকে পুনরায় আলোচনা হচ্ছে।
এর আগে বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বাসভবনে ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এ সিদ্ধান্তের পরও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতভিন্নতা থাকায় তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে গণভোটের পদ্ধতি, সময় এবং প্রশ্নবস্তুর ভিত্তি নিয়েই মূল দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
গতকাল রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানায়, ‘সংবিধান আদেশ’ ছাড়া সনদে সই করবে না। তারা দাবি করে, আগের ঘোষণায় ছাড় দিলেও এবার সংবিধান সংস্কার নিয়ে নতুন আলোচনা ছাড়া আগাবে না।
এদিকে বিএনপি ও জামায়াতও সনদে সইয়ের আগে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে পরিষ্কার নিশ্চয়তা চায়।
৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। চূড়ান্ত অনুলিপি গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়।
গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে কমিশন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। আলোচনায় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে সর্বসম্মতি থাকলেও গণভোটের সময়, কাঠামো ও পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকেই নির্ধারণ হবে, কোন দলগুলো সনদে সই করবে এবং বাস্তবায়নের পথ কীভাবে নির্ধারিত হবে। বৈঠকের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে শুক্রবার অনুষ্ঠেয় স্বাক্ষর কর্মসূচি।