
লাহোর টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘূর্ণির রাজ্যে রাজত্ব করলেন নোমান আলী, সঙ্গে ছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। দুজনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৯৩ রানের জয় তুলে নিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য শেষ ইনিংসে দরকার ছিল ২৭৭ রান। এমন টার্নিং উইকেটে কাজটা সহজ ছিল না, বিশেষ করে নোমান আলীর সামনে। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন আরও ৪টি। তার ঘূর্ণিতে একের পর এক ব্যাটার বিভ্রান্ত হয়েছেন। ডেভাল্ড ব্রেভিসকে বোল্ড করা তার বলটি ছিল টেস্টের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন মুহূর্তগুলোর একটি। লেগ স্টাম্পে পড়ে বলটি অফ স্টাম্পে আঘাত করে—যা দেখে ধারাভাষ্যকার আমির সোহেলও মুগ্ধতা লুকাতে পারেননি।
ব্রেভিস ৫১ বলে ৫০ রান করে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করলেও নোমানের সেই বলেই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরোধ ভেঙে যায়। এতে নোমান আলী ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয়বারের মতো এমন অর্জন। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার সেনুরান মুতুসামিও একই ম্যাচে ১০ উইকেট নিলেও জয়ের দেখা পাননি। বরং তাদের আফসোস আরও বেড়েছে কারণ দলের মূল স্পিনার কেশভ মহারাজ ঘরোয়া ম্যাচ খেলায় ব্যস্ত থাকায় এই টেস্টে ছিলেন না।
দ্বিতীয় ইনিংসে শাহিন শাহ আফ্রিদিও ফিরেছেন দুর্দান্তভাবে। অষ্টম উইকেটে সাইমন হারমার ও কাইল ভেরেইনার ২৯ রানের জুটি যখন পাকিস্তানকে চাপে ফেলছিল, তখনই রিভার্স সুইংয়ে ফিরলেন শাহিন। মাত্র কয়েক ওভারের ব্যবধানে তুলে নিলেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট—ভেরেইনা, সুব্রায়েন ও রাবাদাকে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন দ্রুতগতির বোলিংয়ে। শেষ পর্যন্ত ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শেষ করেন ইনিংস। চতুর্থ ইনিংসে এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স।
সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৮৩ রানে। পাকিস্তানের এই জয় শুধু একটি টেস্ট জয়ের চেয়েও বেশি; এটি ছিল আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার প্রতীক। দীর্ঘদিন পর শাহিনের এমন ফর্মে ফেরা এবং নোমানের ধারাবাহিকতা পাকিস্তানকে নতুন উদ্দীপনা দিয়েছে।