
চীনের বৃহত্তম ভূগর্ভস্থ গির্জায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন যাজককে আটক করা হয়েছে। চীনা পুলিশ পুরো সপ্তাহজুড়ে এই অভিযান চালায়। গত সপ্তাহে বেইজিং বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন ‘নিয়ন্ত্রণ’ আরোপ করার পর চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে এই গ্রেপ্তারের খবর এলো।
রোববার (১২ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আটক যাজকদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
গির্জার একজন মুখপাত্র এবং আত্মীয়-স্বজনরা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের পর থেকে খ্রিস্টানদের ওপর ‘সর্বাধিক অত্যাচার’ শুরু হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সরকারের অনুমোদিত নয়- এমন একটি ‘হাউস গির্জা’র প্রতিষ্ঠাতা যাজক জিন মিংগ্রিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেইহাইতে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে।
গির্জার মুখপাত্র শন লং বলেন, ‘যা ঘটেছে তা এই বছর ধর্মীয় নিপীড়নের একটি নতুন ঢেউয়ের অংশ।পুলিশ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ১৫০ জনেরও বেশি উপাসককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু রোববারের প্রার্থনায় সরাসরি হয়রানি করেছে।’
শন লং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে আরও বলেন, ‘প্রায় একই সময়ে কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী প্রায় ৩০ জন যাজক এবং গির্জার সদস্যকে আটক করেছিল, কিন্তু পরে পাঁচ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। এখনো প্রায় ২০ জন যাজক এবং গির্জার নেতা আটক রয়েছেন।’
রয়টার্স বলছে, বেইহাইয়ের পুলিশের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফ্যাক্সে পাঠানো মন্তব্যের অনুরোধের তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।
শন লং-এর দেখানো একটি সরকারি আটক নোটিশ অনুযায়ী, ‘তথ্য নেটওয়ার্কের অবৈধ ব্যবহারের’ সন্দেহে ৫৬ বছর বয়সী জিনকে বেইহাই শহরের ২ নম্বর আটক কেন্দ্রে আটক রাখা হয়েছে। এই অভিযোগে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
চীনের শীর্ষ ধর্ম নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের নতুন নিয়মে ধর্মযাজকদের অননুমোদিত অনলাইন প্রচার বা ধর্মীয় প্রশিক্ষণ বন্ধ করার পাশাপাশি ‘বিদেশি যোগসাজশ’ নিষিদ্ধ করার এক মাস পর এই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
গত মাসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘কঠোর আইন প্রয়োগ বাস্তবায়ন’ এবং ‘ধর্মের চীনাকরণ’ এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, চীনে রাষ্ট্র-অনুমোদিত গির্জাগুলোতে ৪৪ মিলিয়নেরও বেশি খ্রিস্টান নিবন্ধিত রয়েছে।